খাগড়াছড়ি ভ্রমণের এখনই সময় Rumi, October 9, 2010October 12, 2010 বাংলাদেশের প্রধান বনজ সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চল হচ্ছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি। দেশের সমতল এলাকার তুলনায় এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি যেন সম্পূর্ণ আলাদা। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু, ছোট আর বড় পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে এখানে রয়েছে পাহাড়ী ঝিরি বা ঝরণা, ছড়া আর ছড়ি। ঘন সবুজ অরণ্যভূমির বুক চিরে কল কল শব্দে আপন অরণ্য ভূমির খরস্রোতা নদী চেঙ্গী, ফেনী, মাইনী ও কর্ণফুলী বহমান। অনেকটা সুন্দরবনের মতো পরিব্যাপ্ত গহীন পার্বত্য অরণ্যানী ছড়িয়ে আছে চেঙ্গী, কাসালং ও মাইনী উপত্যকা জুড়ে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণ ক্রমশ বাড়ছে। বর্ষার রেশ কেটে যাওয়ায় শরতের শানত্ম প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের আকর্ষণে পর্যটকদের যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে খাগড়াছড়ি। শরৎ, হেমনত্ম আর শীতের মৌসুমে পর্যটকদের আকর্ষণ খুব বেড়ে যায়। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য যেখানেই বিলিয়ে আছে সেখানেই ছুটে যায় প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণ পিপাসুরা। প্রকৃতির কিছু অপূর্ব সৃষ্ঠি অপার এ সৌন্দর্য্যকে করেছে মহিমান্বিত ও আকর্ষণীয়। এসব সৃষ্টিসমূহ হচ্ছে যথাক্রমে- দেবতার পুকুর ঃ জেলার মাইসছড়ির নুনছড়ির সুউচ্চ পাহাড় এলাকায় রয়েছে ভিন্ন প্রকৃতির এক হ্রদ। তার নাম ‘মাতাই পুখিরী’। এই হ্রদটি দেড়হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হলেও চারদিকে মালভূমি দ্বারা বেষ্টিত বলে হ্রদটি সমতল ভূমিতেই অবস্থিত মনে হয়। স্থানীয় আদিবাসী ত্রিপুরাদের মতে, পাহাড়ের উপরের এই হ্রদে কখনো পানি কমে না এবং পানি অপরিষ্কারও হয় না বলে তারা এর নাম দিয়েছে ‘মাতাই পুখিরী’ অর্থাৎ দেবতার পুকুর। আলুটিলা ঃ চট্টগ্রামের বা ফেনীর কোন গাড়িতে চড়ে খাগড়াছড়ির সুউচ্চ আলুটিলা পর্যটন স্পটে গিয়ে বটমূলে দাঁড়িয়ে পূর্ব দিগনেত্ম দূর-বহুদূর দৃষ্টি ফেরালেই দেখা যাবে পার্বত্য শহর খাগড়াছড়ি। বন্ধুর এই পাহাড়ী উপত্যকায় গড়ে উঠেছে কত না সুদৃশ্য ভবন, সারি সারি ঘর-বাড়ি। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রৌদ্র ঝলমলে টিনের চালাঘর যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। সূর্যাসেত্মর পর আলুটিলা থেকে খাগড়াছড়ি দেখা অর্থাৎ রাতের খাগড়াছড়ি যেন আর এক মনোলোভা দৃশ্য। দূর থেকে দেখা যায় ঘন কালো অন্ধকারে লাখো বাতির মিটিমিটি আলো। রহস্যময় সুরঙ্গ ঃ রহস্যময় সুরঙ্গ আলুটিলা পর্যটন কেন্দ পরিদর্শনকালে পর্যটকদের জন্য আরেকটি আকর্ষণ। ‘পাহাড়ের চোরা এই সুরঙ্গ একাকী ভ্রমণ করতে অনেকেই ভয় পান। এই ভয়ের কারণ সুরঙ্গ ঘন কালো অন্ধকার বলে। এছাড়া সুরঙ্গে শত শত কলাবাদুরও থাকে। রাতে বা দিনে অবশ্যই টর্চ, মশাল কিংবা হ্যাজাক লাইট জ্বালিয়ে ঢুকতে হয় এই সুরঙ্গে। স্থানীয়ভাবে মশাল কিনতে পাওয়া যায়। সুরঙ্গ দেখতে হলে দলে ভিড়ে দেখা ভাল। বটবৃড়্গ, রিছাং ঝর্না ও রাজার দীঘি ঃ স্মৃতিতে ধরে রাখার মতো দুইশ বছরের প্রায় ২০০ ফুট ব্যাসার্ধের বিশালাকৃতির এক বটবৃড়্গ দেখতে যাওয়া যায় আলুটিলার ১০ নম্বরে। খাগড়াছড়ি বা মাটিরাংগা থেকে চাদেঁর গাড়ি বা জীপ নিয়ে যাওয়া যায় ১০ নম্বরে। খাগড়াছড়ি ও মাটিরাংগার মাঝপথে আলুটিলা সল্ট প্রজেক্টের পাশ দিয়ে পায়ে হেঁেট যাওয়া যায় রিছাং ঝর্না দেখতে। মং রাজ বাড়ি ঃ খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলা সদরে গিয়ে ঘুরে দেখা যায় শতাধিক বছরের পুরানো মারমা জাতিগোষ্ঠীর রাজা বা মং রাজার বাড়ি। প্রয়াত মং রাজার নিকটাত্মীয়ের অনুমতি নিয়ে ঐতিহ্যমন্ডিত অনেক কিছুই দেখা যায় এখানে। আলাপ করে জানা যায় অনেক ইতিহাস। তবে নতুন মং রাজার বাড়ী নির্মিত হয়েছে এখন খাগড়াছড়ি সদরের জিরো মাইল মহালছড়া এলাকায়। সে ভবনটিও স্মৃতিতে ধরে রাখার মতো। রামগড় লেক ও চা বাগান ঃ সীমানত্ম শহর রামগড় উপজেলা সদরে নান্দনিক সৌন্দর্যমন্ডিত কৃত্রিম লেক নানাদিক থেকে আনন্দ যোগায় পর্যটকদের। রামগড় সদরের খুব কাছেই বাগান বাজার এলাকায় পাহাড়ী পরিবেশে চা-বাগান ও পিকনিক স্পট। এখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন আদিবাসী সাওঁতালরা। আগ্রহ করে জানা যাবে তাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কে। চা-বাগানের অভ্যনত্মরে রয়েছে শাপলা ফোটা বিশাল প্রাকৃতিক লেক। কিছুদিন পর এ লেকে আসবে শীতের নানান জাতের অতিথি পাখি। বৌদ্ধ ও হিন্দুদের তীর্থস্থান ঃ বৌদ্ধ ও হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের ঘুরে দেখার মত তীর্থস্থান রয়েছে অনেকগুলো। বৌদ্ধ তীর্থ যাত্রীরা খাগড়াছড়ি এসে প্রাচীন য়ংড বৌদ্ধ বিহার, আলুটিলা পর্যটন কেন্দে র আলুটিলা নবগ্রহ ধাতু চৈত্যু, ধর্মপুর আর্য বন বিহার, পানছড়ি অরণ্য কুঠির ও দীঘিনালা বন বিহারে ঘুরে দেখার মত রয়েছে অনেক কিছুই। পানছড়ি অরণ্য কুঠিরে রয়েছে ৪৭ ফুট উঁচু দেশের সর্বোচ্চ বুদ্ধ মূর্তি। হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের জন্য রামগড়ের প্রাচীন দড়্গিণেশ্বরী কালী বাড়ি, খাগড়াছড়িতে নারায়ণবাড়ি ও সিঙ্গিনালায় লোকনাথ সেবাশ্রম, দীঘিনালায় প্রাচীন শিব মন্দির ঘুরে দেখার মত। যাতায়াত ও থাকা খাওয়া ঃ প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত রূপনন্দিনী খাগড়াছড়িকে দেখতে আর জানতে পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে চিনত্মার কোন কারণ নেই। রাজধানী ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সমিতির আরামদায়ক বাস ছাড়ে প্রতিদিন কমপড়্গে ১০-১৫টি। সাইদাবাদ, কমলাপুর, গাবতলী, ফকিরাপুল, কলাবাগান ও টিটি পাড়া থেকে টিকেট সংগ্রহ করে এস আলম,স্টার লাইন, শ্যামলী, সৌদিয়া, শানিত্ম স্পেশাল ও খাগড়াছড়ি এক্সপ্রেসযোগে খাগড়াছড়ি আসা যায়। ঢাকা থেকে ট্রেনে ফেনী এসেও হিলকিং অথবা হিল বার্ড বাসে চড়ে খাগড়াছড়ি আসা যায়। চট্টগ্রামের অক্সিজেন থেকেও শানিত্ম স্পেশাল ও লোকাল বাসে উঠে আসা যায় খাগড়াছড়িতে। খাগড়াছড়িতে আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও মোটামুটি ভাল আছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন নির্মাণ করেছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন এক সুবিশাল “মোটেল”। Related Travel
ঘুরে আসুন গেম রিজার্ভ March 29, 2011 কক্সবাজার জেলার টেকনাফে অবস্থিত দেশের অন্যতম একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল 'গেম রিজার্ভ'। কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের পাশে হোয়াইখিয়ং বাজার থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে সংরক্ষিত এ বনাঞ্চলের শুরু। নানান বৈচিত্র্যে ভরপুর সংরক্ষিত এ বনাঞ্চল থেকে ঘুরে আসতে পারেন এই সময়ে। একনজরে গেম রিজার্ভ টেকনাফ উপজেলায় প্রায় ১১৬১৫… Read More
মুজিবনগরের আম্রকাননে November 30, 2010November 30, 2010 বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের শুরু আগামীকাল থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নানান স্মৃতি বিজড়িত মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর। বিজয়ের এই মাসে ঘুরে আসতে পারেন জায়গাটি থেকে। মুজিবনগর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে বাংলাদেশের অনর্্তবতর্ীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল। এর আগে ১০ এপ্রিল বাংলাদেশে বিপস্নবী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। ওইদিন অস্থায়ী… Read More
সুন্দরবনের কলাগাছিয়া April 6, 2011 পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অধীন বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের কাছেই বনবিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে কলাগাছিয়া ইকো- টু্যরিজম কেন্দ্র। সুন্দরবনের পরিবেশকে ঠিক রেখে পর্যটকদের বন ভ্রমণের জন্য নানান সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি বন্যপ্রাণী দেখারও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। যারা মংলার কাছে করমজল ইকো-টু্যরিজম কেন্দ্র দেখেছেন, এ জায়গাটি তাদের কাছে আরো বেশি সাজানো-গোছানো ও সুন্দর… Read More