তুরস্ক- ইস্তানবুলে ঘোরাঘুরি Rumi, December 10, 2010December 10, 2010 কখন কাজে লেগে যায় বলা যায় না। লেখাটি বিডিনিউজ থেকে নেয়া। ২৬ নভেম্বর ২০১০ তারিখে আমরা তিনজন ইন্তানবুল এসে পৌঁছালাম। গত বছরে শীতে এসেছিলাম, আর এই বছরেও এই শীতেই আসা হলো আমার। টেম্পারেচার ১২-১৬ হলেও কনকনে বাতাস হাড্ডিতে গিয়ে লাগে। আমরা ব্লু মস্কের সবচেয়ে কাছের ছোট্ট একটা হোটেলে উঠেছি। আমার কাছে এখানকার সবচেয়ে রঙিন আর বৈচিত্র্যময় এলাকা এটা। সুলতানআহমেত — ব্লু মস্ক, টপকাপি, হায়া সোফিয়া আর প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো গ্র্যান্ড মার্কেট সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়। গতবারে অফিসের কাজে মাত্র ৩ দিনের জন্য ছিলাম। শেষ দিনে দৌড়ে দৌড়ে ২/৩ টা জায়গা ছাড়া কিছুই দেখা হয়নি। এবার ভালো করে ঘোরা, দেখা, উপভোগ করা–সব হবে। শুনেছি তুরস্কের যে কোনো গয়না খুব সুন্দর হয়। না কিনলেও এটা দেখার খুব শখ। আসতে আসতে দিদিভাই (আমার বড় বোন), চন্দনা আপা, আর আমি শুধু জল্পনা-কল্পনা করতে করতে এসেছি কী কী করা যায়। তুরস্কের বিখ্যাত সুফি নাচ (Swirling dervish) রাতে এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এখানকার রাত ৮টা। হোটেলের নাম ‘আরারাত’। ছোট্ট একটা ৩ তলা হোটেল। আর আমাদের জানলা থেকেই ব্লু মস্ক। রাতে মিনারগুলো আলোয় সুন্দর লাগছে। আমরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। কোনো মতে ব্যাগ রুমে রেখেই দৌড়। রাস্তার উল্টো দিকের বাজারের রেস্তোরাঁয় গেলাম। যাবার পথের প্রতিটা ছোট ছোট দোকানে আমার বোন আর চন্দনা আপা আটকে যেতে থাকলো। বাইরে থেকেই এখানকার গয়না আর কাচের জিনিসের বৈচিত্র্য দেখে। কেনার থেকে দেখার আনন্দই বেশি। যে দোকানে খেতে গেলাম (রাস্তার উপরেই খোলা কিন্তু তাঁবু ধরনের ছাদ) দেখি তুরস্কের বিখ্যাত সেই সুফি নাচ (Swirling dervish) আর গান হচ্ছে। আমাদের আর পায় কে! কিন্তু ঠাণ্ডা বাতাসের জন্য বেশিক্ষণ বসতে পারলাম না। তৈরি ছিলাম না তখন অতো ঠাণ্ডার জন্য। হোটেলে ফিরে একটা আরামের ঘুম! হোটেল আরারাত থেকে দেখা ব্লু মস্ক (কিস্তি ১-এর পরে) ২য় দিন । ২৭ শে নভেম্বর ২০১০ এখানকার সময় ভোর চারটায় গেল ঘুম ভেঙে। জানালা দিয়ে ব্লু মস্ক। ঘণ্টায় ঘণ্টায় আলোর সাথে সাথে রূপ পাল্টাচ্ছে। জানালাটা ছবি তোলার জন্য খোলার সাথে সাথে হু হু করে ঠাণ্ডা বাতাস ঢুকলো। আমাদের হোটেলের সামনে দিয়ে সব টুরিস্টের বাস যাওয়া শুরু হয়ে গেছে। ছাদে নাস্তা খেতে গিয়ে দেখলাম একদিকে মারমারা সাগর আরেকদিকে ব্লু মস্ক। আমরা প্ল্যান করলাম প্রথমে ব্লু মস্ক দেখে তারপর হায়া সোফিয়া দেখবো। মজা লাগলো দেখে যে এখানকার ছেলে-মেয়েদের মধ্যে কোনো জড়তা নাই। মেয়েরা হিজাব করে বোরখা পরেও কত সহজে জড়তাহীন ভাবে চলাফেরা করছে, জীবনকে উপভোগ করছে। গ্রান্ড বাজার ব্লু মস্ক প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো, অটোমানদের সময়ে তৈরি। ব্লু মস্কের ভেতরে ঢোকার পরে নিচু ঝাড়বাতি আর রঙিন কাচের কারুকাজ দেখে আমি, দিদিভাই আর চন্দনা আপা খটাখট ক্যামেরার শাটার টিপতে লাগলাম। কোন অ্যাঙ্গেল ছেড়ে কোন অ্যাঙ্গেল থেকে তুলবো বুঝেই পাচ্ছিলাম না। প্রচুর ট্যুরিস্টের ভিড়ে ঠিক মতো দাঁড়াতেও পারছিলাম না। যাই হোক, ধাক্কাধাক্কি করে বেরিয়ে আসার পর, সামনে বেশ কিছুক্ষণ বসে ব্লু মস্কের সৌন্দর্য হজম করার চেষ্টা করলাম। সাথে নিয়ে নিলাম গরম গরম অ্যাপল ফ্লেভারড চা। দিনের শুরুটা মেঘলা ছিল দেখে গরম চা বেশ জমেছিল। পাশে দেখি এক ফুড কার্টে কাঠাল বীচি ধরনের কী একটা ভাজছে। সাইজে একটু বড়, সেটাও নিয়ে তিনজন ট্রাই করে ফেললাম–একদম কাঠাল বীচি! …….. গাইড কাদির জানালো তাঁকে তাঁর বন্ধুরা ‘জেসাস’ বলে ডাকে। ……. ধীরেসুস্থে রাস্তার ওই পাড়ে হায়া সোফিয়া দেখতে গেলাম। ঢুকতেই পড়লাম এক গাইডের পাল্লায়। বাট দরদামে আর মেলে না। শেষমেশ মাঝামাঝি এক দামে আসতে পারলাম। আমাদের গাইড কাদির জানালো তাঁকে তাঁর বন্ধুরা ‘জেসাস’ বলে ডাকে। আসলেই কাদির একদম জেসাসের মতো দেখতে। এঁর কাছ থেকে জানতে পারলাম হায়া সোফিয়া মানে হোলি উইজডম। পবিত্র জ্ঞান। ১৬০০ বছরের পুরোনো। আগে আরো দুইবার এটা বানানো হয় এবং ধ্বংস করা হয়। তৃতীয়বারেরটা টিকে গেছে। এটা প্রথমে চার্চ ছিল, পরে অটোমানদের সময়ে চার্চকে মসজিদ বানিয়ে ফেলা হয়, বাইরে দুইটা মিনার তৈরি করে। এরপর–খুব বেশি বছর আগে নয়–আর্লি টোয়েন্টিন্থ সেনচুরিতে এটাকে মিউজিয়াম বানিয়ে ফেলে। …….. আব্রুমুক্ত অ্যানজেল ……… দ্বিতীয় বার যখন হায়া সোফিয়া বানানো হয়, সে সময়কার কিছু স্তম্ভ এখনো রয়ে গেছে। একটা স্তম্ভে দেখা যাচ্ছে কয়েকটা ভেড়া একটা খেজুর গাছের দিকে যাচ্ছে। এগুলো সবই সিম্বলিক। ভেড়াগুলো হচ্ছে মানুষ, কারণ যীশুকে শেফার্ড বা মেষপালক মনে করা হয়। আর খেজুর গাছটা স্বর্গ। বেশ মজাই লাগলো ইন্টারপ্রিটেশনগুলো! ভেতরেও মজার এবং ইন্টারেস্টিং আরো অনেক কিছু দেখলাম। একটা ওয়াল পেইন্টিং ছিল যেখানে দেখা যাচ্ছে রাজা যীশুকে সোনা উপহার দিচ্ছেন, কারণ তিনি যীশুর কাছ থেকে চতুর্থ বিয়ে করার অনুমতি চাচ্ছেন। হায়া সোফিয়ার ভেতরে উপরে চার কোনায় চারটা অ্যানজেলের ছবি আছে, যাদের মুখগুলো এটা যখন মসজিদ বানানো হয় তখন ঢেকে দেয়া হয়েছিলো। রিসেন্টলি, মাত্র পাঁচ মাস আগে, একটা অ্যানজেলের মুখের আব্রু সরানো হয়েছে, বাকিগুলার সরানোর পথে। ব্লু মস্কের ভেতরে এখানে অনেক ছবি তুলে আমরা এর বাইরেই দারভিশ নামে একটা ছোটো রেস্টোরেন্টে বসে ডোনার কেবাব আর কোক খেলাম। এরপর গ্রান্ড বাজার পর্ব। আমরা তিনজনই এক্সাইটেড। একটু মজা করে শপিং করবো, বাট ওখানে পৌঁছে সবাই সে কী পরিমাণে হতাশ হলাম তা আর বলার না! প্রথমত যেরকম শুনে এসেছি টার্কিশ জুয়েলারি খুবই সুন্দর সেরকম আহামরি কিছুই খুঁজে পেলাম না। তার ওপর যে কটা কিছুটা পছন্দ হলো, সেগুলোর দাম শুনে মোটেও কেনার ইচ্ছে রইলো না। শেষে কয়েকটা সাবান, সেরামিকের বাটি কিনে হোটেলের দিকে রওনা দিলাম। সবচেয়ে মজা হলো এই সবকিছুই আমাদের হাঁটা পথের মধ্যেই। …….. ক্রোয়াশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্বামী ……. আমরা হাঁটতে হাঁটতে রাস্তা থেকে আমাদের রাতের খাবার কিনে হোটেলে চলে আসলাম। লিখতে ভুলেই গেছিলাম যে হায়া সোফিয়াতে আমরা দাঁড়িয়ে যখন পোজ দিচ্ছি ছবি তোলার জন্য তখন হঠাৎ সব সিকিউরিটিআমাদের তিনজনকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে লাগল। বুঝলাম ভিআইপি কেউ এসেছে। দিদিভাই সুযোগ বুঝে ভিআইপিদের ছবিও তুলে ফেলল। তারপর গিয়ে গার্ডদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম উনি ছিলেন ক্রোয়াশিয়ার প্রেসিডেন্ট Jadranka Kosor। আরেকটা ব্যাপার, হায়া সোফিয়াতেও দেখলাম ঝাড়বাতিগুলো অনেক নিচু। আমাদের গাইড জানালেন, আগে এগুলি তেল দিয়ে জ্বালানো হতো, তাই তেল দেওয়ার সুবিধার জন্য নিচু করে বানানো হয়েছে। এই লেখায় হায়া সোফিয়ার ইতিহাসের এবং ওয়াল পেইন্টিং-এর ইন্টারপ্রিটেশন সবই কিন্তু আমাদের গাইডের কাছ থেকে শোনা। টপকাপি প্যালেসে হযরতদের ব্যবহৃত জিনিস রাখার ঘরে ঢোকার মুখে দরজার ওপরে বাতি। (কিস্তি ২-এর পরে) তৃতীয় দিন । ২৮ নভেম্বর ২০১০ আজ বেশ মজার কিছু ঘটনা ঘটলো। আমার বোন কোথাও গেলে স্থানীয়দের সম্পর্কে জানতে খুব পছন্দ করে। আমি ইস্তানবুলে মূলত অফিসের কাজের জন্য এসেছি। প্লেনে ওঠার পর থেকে ও “তোর অফিসের কলিগের বাসায় দাওয়াত নে” বলে আমাকে খোঁচাতে লাগলো। দিদিভাই এটা করে খুব মজা পায়। ……. ফলের গুচ্ছ। …….. যাই হোক, সকালে হোটেলের নিচের দোকান থেকে চন্দনা আপা যখন জিনিস কিনছেন আমরা দোকানের মেয়ে দুটোর সাথে বেশ খাতির করে ফেললাম। এখানকার মানুষরা খুব আন্তরিক। বাট দেখলাম বেশ কৌতূহলীও, কোন দেশ থেকে আমরা এসেছি তা জানার ব্যাপারে। আমাদের প্রথমেই জিজ্ঞেস করে আমরা ভারত থেকে কিনা আর আমরা খুব গম্ভীরভাবে উত্তর দেই, আমরা বাংলাদেশী। এই দোকানেও এই দিয়েই শুরু। দোকানের ২৩ বছরের সুন্দরী এই মেয়েটির ইচ্ছে হলো আমাদের বয়স জানার। আমাদের একজনের ৩৭, আরেক জনের ৩৯ জেনে তার আক্কেল গুড়ুম। গল্প করে জানতে পারলাম, এরা একজন এখানকার। আর আরেক জন এসেছে আন্টালিয়া থেকে। চন্দনা আপা এত কেনাকাটা করে ফেললেন যে একদিন চা খাবার দাওয়াত দিয়ে ফেললো ওরা। পুরা না হলেও দিদিভাইয়ের শখ কিছুটা পূরণ হলো! ……. টপকাপি প্যালেসের প্রথম প্রবেশ পথ। …….. এখানে মেয়েরা এত সুন্দর! আমরা ঠিক করলাম, চন্দনা আপার বড় ছেলের বিয়ে এখানকার কোনো মেয়ের সাথে দেয়া হবে। এতে আমাদের টার্কি আরো আসা হবে, প্লাস বেশ সুন্দরী একটা ছেলের বউও পাওয়া যাবে। আমরা যত জনের সাথে কথা বললাম, এদের ব্যবহার এবং মন খুব ভালো। টপকাপি প্যালেসে। এরপর গেলাম টপকাপি প্যালেসে। টপকাপি প্যালেস এখন মিউজিয়াম। এটা ফিফটিন্থ সেঞ্চুরিতে বানানো হয়েছিলো। এখানে এসে সিকিউরিটি চেক করে আমরা মনের আনন্দে ভেতরে গিয়ে ঘুরতে লাগলাম। যেখানে যেখানে ছবি তোলায় নিষেধ নেই, ছবি তুলতে লাগলাম। হঠাৎ দিদিভাইয়ের খেয়াল হলো তার ব্যাকপ্যাক সাথে নেই! দৌড় দৌড়–গেটের দিকে! গিয়ে দেখি সিকিউরিটি যত্ন করে ব্যাগ রেখে দিয়েছে। ব্যাগের ভেতর ওর পাসপোর্ট, টাকা, ক্রেডিট কার্ড সব ছিলো। কয়েক মিনিটে আমরা তিনজনই মনে মনে ঠিক করছিলাম ব্যাগটা না পাওয়া গেলে কী কী করতে হবে। মানুষের মন অনেক দ্রুত চিন্তা করে ফেলতে পারে! ……. মহাপুরুষদের ব্যবহৃত জিনিস রাখার ঘরের দরজা। ……. এরপর শুরু হলো আরাম করে ঘোরা। তখনকার মানুষরা যে কী বিশাল ছিলো! তাদের সোনা, হীরা, চুনি, পান্না দেখলে এক সময় দমবন্ধ লাগতে থাকে–এত ধনী কীভাবে হয়! টপকাপি মিউজিয়ামের একটা ঘরে হযরত দাউদ (আঃ), হযরত ইব্রাহীম (আঃ), হযরত মূসা (আঃ), হযরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর ব্যবহার করা সব জিনিস রাখা আছে। পুরনো জিনিসগুলো সুন্দরভাবে ওখানে সংরক্ষিত আছে। দেখার পর ভেতরেই একটা রেস্টোরেন্টে গেলাম। খোলা রেস্টোরেন্ট। সমুদ্র, নদী, আর ইস্তানবুলের এশিয়ার দিকটা দেখা যাচ্ছে। খাবারের দাম দেখে আমি আর দিদিভাই ভিমরী খেলাম। চন্দনা আপা বললেন, এই লাঞ্চটা উনি আমাদের করাবেন। আমরা খুশী। …….. এশিয়া সাইডের একটা স্টেশনে আগুন লেগেছে। …….. আমাদের খাওয়া প্রায় শেষের দিকে, হঠাৎ দেখি এশিয়ার সাইডের একটা বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছে। প্রচুর ধোঁয়া আর দাউ দাউ আগুন জ্বলছে। রেস্টোরেন্টের লোকেরা বললো ওইটা ওই দিকের একটা স্টেশন। নদীর পাড়েই। দেখতে দেখতে কখন যে বিকেল পাঁচটা বেজে গেলো টের পাইনি। সেই সকালে টপকাপিতে ঢুকেছি আর এতটা সময় পার করে দিলাম এটা দেখতে দেখতে। ভিতরে আসলেই অনেক কিছুই দেখার আছে। জায়গাটা বেশ বড় আর কিছু দূর পর পর সুন্দর বসার জায়গা। হাঁটতে হাঁটতে বা দেখতে দেখতে হাপিয়ে গেলে বসে বিশ্রাম নেয়া যায়। টপকাপি প্যালেসের ভেতরে রেস্টোরেন্ট Konyale। আমরা দুপুরের খাবার শেষ করে যে দিকটায় গেলাম সেদিকে দেয়াল আর রুমগুলো এখানকার বিখ্যাত মোজাইক দিয়ে করা। এখানেই একটা ঘর আছে যেখানে রাজকুমারদের ‘মুসলমানি’ করা হতো। দেয়ালের নক্সা আর রঙ চমৎকার। সব দেখে মুগ্ধ হয়ে আমরা ধীরেসুস্থে হেলতে-দুলতে ওখান থেকে বেরিয়ে আসলাম। ইস্তানবুলে প্রচুর বিড়াল দেখা যায়। এখানে রাস্তা-ঘাটে প্রচুর বিড়াল দেখা যায়। বেশ নাদুস-নুদুস আর দেখলেই বাংলায় ‘হুলো বিড়াল’ শব্দটা বেশ মনে পড়ে যায়। একটা নরম নরম তুলো তুলো মতো ব্যাপার আছে। ছেলেরা এখানে মাঝে-মাঝেই একটু অতিমাত্রায় বন্ধুসুলভ হয়। যদিও সেটা হার্মলেস। এবং এটাতে বিরক্ত হবারও কিছু নেই। যেমন আমরা হেঁটে একবার হোটেলে ফিরছি, রাস্তার পাশের একটা রেস্টোরেন্ট থেকে একজন হঠাৎ বেরিয়ে এসে দিদিভাইকে বললো, ‘তুমি কিছু ফেলে যাচ্ছো।’ দিদিভাই, চন্দনা আপা, আমি তো সব খুঁজতে থাকলাম যে দিদিভাই কী ফেললো। ছেলেটা তখন হাসতে হাসতে আমার বোনকে বললো ‘আমার হৃদয়’। আমরাও এটা শুনে হেসে চলে এলাম। এখানে কেউ বিরক্ত করবে না বাট মাঝে মাঝে এরকম হাল্কা ঠাট্টা করে চলে যাবে। যেমন চন্দনা আপা একবার একটা দোকানদারের সাথে দামাদামি করতে করতে এতই কম দাম বললো যে দোকানদার তার নিজের বুকের বাম দিকে হাত রেখে বললো ‘তুমি আমার হৃদয় ভেঙে দিচ্ছো!’ আবার রাস্তায় হাঁটছি হঠাৎ কেউ নিজে থেকেই এসে জিজ্ঞেস করবে যে সে আমাদের ঠিকানা চেনাতে সাহায্য করবে কিনা। তবে এই পর্যন্ত কাউকে দুর্ব্যবহার করতে বা অসন্তোষজনক ব্যবহার করতে দেখিনি এবং ঠকাতে দেখিনি। ……… স্যুভেনির স্টল। ……. আজ সন্ধ্যায় আমাদের হোজাপাশা কালচারাল সেন্টারে সুফি গান আর নাচ দেখতে যাবার কথা। হোটেলের সামনে এই নাচ দেখেছি কিন্তু এরকম গ্রুপ নাচ দেখার এক্সপিরিয়েন্সই আলাদা! আমরা মহা এক্সাইটেড। টপকাপি থেকে পাঁচটার দিকে হোটেলে ফিরে একটু বিশ্রাম নিয়ে গায়ে আরো কিছু গরম কাপড় চাপিয়ে আমরা রেডি। রিসেপশনে গিয়ে মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম হোজাপাশায় পৌঁছানোর উপায়। এই মেয়েটা হেল্পফুল, যখন যা জানতে চেয়েছি সবকিছুতেই আমাদের সাহায্য করেছে। ও জানালো যে আমরা হেঁটে অনায়াসে ১৫ মিনিটের মধ্যে হোজাপাশায় পৌঁছে যেতে পারবো। হায়া সোফিয়ার পাশের ট্রাম লাইন ধরে হাঁটা দিলেই হবে। মহা উৎসাহে রওনা দিলাম আর ২/৩ বার পথে জিজ্ঞেস করে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে ‘হোজাপাশায়’ পৌঁছেও গেলাম। টিকেট কিনলাম ২৫ ইউরো দিয়ে। মানে প্রায় ২,৫০০ টাকা! তারপরই দেখি কাউন্টারে লিখে রেখেছে যে ছবি তোলা যাবে না। কী যে বিরক্ত, রাগ আর হতাশ হলাম! তারপরও ভেতরে গিয়ে বসলাম আমরা তিনজন। শুরু হবার আগে মাঝের স্টেজের ছবি উঠিয়ে নিলাম আমি আর দিদিভাই। হোজাপাশা স্যোয়ারলিং ডারভিশ-এর স্টেজ। প্রোগ্রাম ১ ঘণ্টার। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হলো। স্টেজে নীল আলো আর আমরা চারদিকে গোল হয়ে বসে আছি। স্টেজের এক পাশে ২টো সিঁড়ি উপরে আরেকটা ছোট স্টেজ যেটাতে লালচে আলো জ্বালিয়েছে মিউজিশিয়ানদের জন্যে। বাজনাবাদক চারজন ধীরেসুস্থে প্রবেশ করলেন এবং একটু উঁচু ওই স্টেজে গিয়ে বসলেন। দশ মিনিট বাজালেন। দ্বিতীয় পিসটা ভালোই ছিলো। এদিকে আমরা গালে হাত দিয়ে নাচের অপেক্ষায় বসে আছি। দশ মিনিট বাজানোর পর তাঁরা চলে গেলেন। আবার ……. প্যালেসের ভেতরে। ……. পাঁচ মিনিট সব চুপচাপ। এরপর দুই জন এসে স্টেজে কাপড় বিছিয়ে চলে গেলেন। তারপর আবার সব চুপচাপ। এভাবেই মাত্র দশ মিনিটের ওই বাজনাসহ প্রায় পঁচিশ মিনিট হয়ে গেলো কিন্তু নাচের কোনো পাত্তা নাই। এরপর সাত জন এসে উপরের স্টেজে বসলেন। এই সাতজনের মধ্যে এবার চারজন যন্ত্রবাদক আর তিনজন গায়ক। আমি এর মধ্যে লুকিয়ে আমার ক্যামেরার ভিডিও রেকর্ডার অন করে দিলাম (একটু চুরি আর কি!)। আরো প্রায় দশ মিনিট বাজনা আর সুরার মতো কিছু একটা পাঠের পর পাঁচ জন Swirling Dervish মঞ্চে প্রবেশ করলেন। মাত্র ২০টা মিনিট মতো আমরা এদের নাচ দেখলাম। এর থেকে ২৫ ইউরো যদি আমার ড্রেনে পড়ে ভেসে যেতো আমাদের মনে হয় কম দুঃখ, কষ্ট, রাগ হতো। এত আশা নিয়ে এসেছিলাম যে একটা সুন্দর প্রোগ্রাম এনজয় করবো। তার কিছুই হলো না! ছবিও তুলতে পারলাম না। যারা ইস্তানবুলে এসে Swirling Dervish দেখার প্ল্যান করছেন বা করবেন, প্লিজ হোজাপাশাতে আসবেন না। মনের দুঃখে বিল্ডিংয়ের নিচে এসে দেখলাম একটা দোকানে খুব সুন্দর সুন্দর স্কার্ফ ঝুলছে। ব্যাস, আমাদের আর পায় কে! ওখানে ঢুকে গিয়ে প্রত্যেকে একটা করে কিনে বেরিয়ে এলাম। পেয়েও গেলাম বেশ সস্তায়। চন্দনা আপা তখন বললেন অ্যাট লিস্ট এখানে এসে স্কার্ফগুলো কিনতে পারলাম ভালো দামে, এটাই সান্ত্বনা। …….. টপকাপি প্যালেস। …….. আজ রাতেই আমাকে চলে যেতে হবে আমার অফিসের ব্লক করা হোটেলে। সেখানে পরদিন সন্ধ্যা থেকে মিটিং শুরু হবে। তাই চন্দনা আপা সাজেস্ট করলেন একটা টেক্সি নেবার। ট্রাম স্টেশনের কাছে গিয়ে টেক্সি পেলাম। টেক্সিঅলাকে গিয়ে বললাম আমাদের গন্তব্যস্থলের কথা (আগেই উল্লেখ করেছি হোটেল বা আমাদের হোটেল পাড়াটা মাত্র ১৫ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে)। টেক্সিঅলা শুনে আমাদের জানালো যে তাকে নিলে আমাদের ১৫ টার্কিস লিরা (প্রায় ৭৫০ টাকা) দিতে হবে, তার বদলে ট্রাম ধরলে মাত্র ৩ লিরায় (১৫০ টাকায়) আমরা পৌঁছে যাবো। এটাও একটা আশ্চর্যের ব্যাপার, নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে আমাদের কোনটাতে ভালো হবে তা দেখিয়ে দিলো! আমাদের মনটা আরো একটু ভালো হলো। হোটেলের মোড়ে এসে একটা রেস্টোরেন্টে বসে খেয়ে নিলাম। এখানে এসে খাওয়া ৩ গুণ বেড়ে গেছে–খুবই মজা! তারপর আরারাত-এ ফিরে আমি একটা টেক্সি ডেকে রওনা দিলাম আমার নতুন হোটেলে। দিদিভাই, চন্দনা আপা আর হোটেলটা ফেলে যেতে খুবই মন খারাপ হয়ে গেল। কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত যেহেতু অফিসের কাজ শুরু হচ্ছে না তাই সকালে আবার এখানে চলে আসবো–এই সান্ত্বনা নিয়ে গেলাম চলে। সুইসোটেল, বসফরাস ৩০/১১/২০১০ চতুর্থ দিন । ২৯ নভেম্বর ২০১০ চন্দনা আপার একটা বুটিক আছে ‘চন্দন’, সেখানে তার ডিজাইন করা কাপড়, ব্যাগ আর গয়না পাওয়া যায়। প্রথমদিকে আমি ওনার কয়েকটা পোশাকের মডেল হয়েছিলাম। দিদিভাই তার অনেক মডেলের ছবিও তুলেছে। তো কাল রাতে সেলিম ভাই (চন্দনা আপার হাজব্যান্ড) ফোনে যখন বললেন চন্দনা আপাকে, ‘তোমাদের এই ট্রিপ তো পুরা ডিজাইনার, মডেল আর ফটোগ্রাফারের ট্রিপ হয়ে গেলো। পুরো টিম এখন ওখানে।…’ চন্দনা আপা আর দিদিভাইয়ের মাথায় সাথে সাথে ফটো শ্যূটের আইডিয়া চলে আসলো। সকালে আমি আরারাত হোটেলে পৌঁছানোর সাথে সাথে আমাকে চন্দনা আপার স্টকের একটা কানের দুল আর একটা স্কার্ফ পরিয়ে ছাদে নিয়ে যাওয়া হলো। তারপর ব্লু মস্ক আর হায়া সোফিয়াকে পিছনে আর পাশে রেখে ১ ঘণ্টা ধরে চললো ফটো শ্যূট। কী যে হলো তা দু’জনই জানে বাট ডিসেম্বরে চন্দনা আপার জুয়েলারি এক্সিবিশন অ্যান্ড সেল-এর জন্য উনি ১-২ টা ছবি পছন্দও করে ফেললেন। তো আমাদের ইস্তানবুল ঘুরতে এসে মজার কাজও হয়ে গেলো! আমাদের এই ফটো শ্যূটের সময় ওখানে যে ব্রেকফাস্ট বানায় খাদিজা তাকেও মডেল বানিয়ে ফেললাম। যে রুম গুছিয়ে দেয় তাকেও নিয়ে নিলাম। ওরা তো মহাখুশী। এরপর আমরা আবার বেরিয়ে পড়লাম। আজ প্ল্যান হলো ডোলমাবাহচে প্যালেস আর ইশতিকলাল (টাকসিম স্কয়ার) ঘুরবো। ট্যাক্সিতে ওঠার পর ট্যাক্সিওয়ালা জানালো যে আজ সোমবার দেখে ডোলমাবাহচে বন্ধ। তো আর কী করা, চলে গেলাম ইশতিকলালে। ইশতিকলালের রাস্তা জুড়ে দোকান। নাম করা সব ব্র্র্যান্ডের সাথে সাথে এখানকার লোকাল দোকান, গিফট শপ, খাবারের দোকান, টার্কিশ মিষ্টির দোকান, নানা ধরনের গয়নার দোকান, কাঁচা বাজার, মাছের বাজার সব! ছোট ছোট গলির ভেতর ছোট ছোট ক্যাফে আর রেস্টোরেন্টগুলো দেখতে যে কী মজা লাগে। আমরা ঠিক করলাম, এরকম একটা দোকানেই আমরা দুপুরের খাবার সারবো। ইশতিকলালের রেস্টোরেন্টে আমরা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ একটা গলি দেখে তিন জনেরই ভালো লাগলো–আর এই গলিতেই আমরা পরের পাঁচটি ঘণ্টা কাটিয়ে দিলাম। এখানে চন্দনা আপা ওনার দোকানের জন্য এবং নিজের জন্য খুবই সুন্দর কিছু গয়না পেলেন। দিদিভাইও পেয়ে গেলো ২টা আর আমি আবার একটা স্কার্ফ কিনে ফেললাম। সবাই বলে আমি দরদাম খুব ভালো করতে পারি। ৩-৪ টা দোকান থেকে টুকটাক কিছু কেনার পর একটা দোকান পাওয়া গেলো যেখানে অনেকগুলো গয়না পছন্দ হলো চন্দনা আপার। সব পছন্দ করে আমাকে বললেন দাম করতে। আমি দামাদামি করে কমিয়ে দোকানদারকে বললাম ডলারে কনভার্ট করে দিতে। তিনি আমাকে ডলারে করে দেয়ার পর আমি আবার সেখান থেকেও কমালাম। বেচারা দোকানদার আমার পিড়াপিড়িতে সেটুকও কমিয়ে দিলেন। এখানে বলে রাখি, ইস্তানবুলে সব জায়গাতেই এখানকার লিরা, ইউরো বা ডলার সব নেয়। ডলার বা ইউরো নিয়ে এসে লিরায় কনভার্ট করার ঝামেলা করার দরকার হয় না। এই এক লট কেনার পর চন্দনা আপার আরো পছন্দ হলো এবং আমি আবারও আগের মতো করেই দরদাম করে দিলাম। টাকসিম স্কয়ার এর মাঝেই আমরা এক ফাঁকে গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আসলাম। এত মজার খাবার! আমরা এক গাদা খাবার নিয়ে তিনজনে শেয়ার করলাম। মুরগী, ডোনার কাবাব, একটা গরুর মাংসের কোপ্তা, গরু ভুনা বেগুন দিয়ে, আরেকটা নেয়া হলো যেটার নিচেরটা গরু মাংসের কিমা আর উপরে আলু ভর্তা করে দেয়া। এত কিছু খেয়ে নড়াচড়া করাই মুশকিল হয়ে গেলো। যাই হোক, কেনাকাটা খাওয়া-দাওয়া সব করে চারটার দিকে আমরা ফেরার ডিসিশন নিলাম। হাঁটতে শুরু করলাম যেখানে আমাদের ট্যাক্সি নামিয়ে দিয়েছিল সেদিকে। ট্যাক্সি নেবার আগে আমরা কিছু টার্কিশ মিষ্টি কিনে নিলাম। একটা ছিলো দেখতে অনেকটা বড় চারকোনা পুডিংয়ের মতো। কিন্তু সাদা আর খেতে অনেকটাই আমাদের পাটিসাপটা পিঠার মতো। কী যে মজা! চলে আসলাম এবার আমার হোটেলে। রুমে বসে সব মিষ্টি খেলাম, তারপর দিদিভাইরা ফিরে গেলো হোটেল আরারাতে। আর আমি গেলাম আমার হোটেলের নিচে আমার অফিসের ‘ওয়েলকাম ডিনারে’। সুইসোটেল, বসফরাস ৩০/১১/২০১০ পঞ্চম ও ষষ্ঠ দিন । ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর ২০১০ ইস্তানবুলের ৩টা সিম্বল–জুডাস গাছ যেটা এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বেগুনী রঙের ফুলে ভরে থাকে। ৭টা পাহাড়। আর পপি ফুল। প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ পপি ফুলের গাছ লাগানো হয় এবং ফুল ফোটে। ১ কোটি ২০ লাখ হচ্ছে ইস্তানবুলের জনসংখ্যা। এই শহরটা ৮০০০ বছর পুরানো, তখন বসফরাসের কোনো অস্তিত্বই ছিলো না। তাই তখন ইস্তানবুলের এশিয়া দিক আর ইউরোপ দিকের ভাগও ছিলো না। ভূখণ্ড ভাগ হয়ে এই বসফরাস এসেই যত ঝামেলা করলো। তবে ইস্তানবুলই কিন্তু একমাত্র শহর না যেটা ২ মহাদেশে ভাগ হয়ে গেছে, টার্কিরই আরেকটা শহর চানাক্কালের অবস্থাও একই রকম। ১৪-১৫ শতাব্দীর সময় ইস্তানবুল ছিলো পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শহর। এখন এটা ইউরোপের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ এবং পৃথিবীর নবম সর্ববৃহৎ শহর। আমার এই নতুন হোটেল থেকে বেরিয়ে ১০ মিনিট হেঁটে নিচের দিকে গেলেই ডোলমাবাহচে। এই প্যালেসটা যেখানে বানানো সেখানে আগে পানি ছিলো। এটা বানানোর জন্য ২০,০০০ গাছ পানির মধ্যে দিয়ে পানির নিচে মাটিতে পোঁতা হয়েছে, এবং তারপর তার উপরে এই প্যালেস তৈরি করা হয়েছে। এই প্যালেসটা অনেকটাই ইউরোপীয় স্টাইলে তৈরি। ১৯২৩ সাল পর্যন্ত সুলতানেরা এখানে বাস করেছেন এবং আতাতুর্ক মারাও যান এই প্রাসাদেই। আনফরচুনেটলি আমি দ্বিতীয় বার যখন আবার এটা দেখতে গেলাম, তখনো আমাকে জানানো হলো যে সেটা সেদিনও বন্ধ। সন্ধ্যায় আমাদের অফিস থেকে বসফরাসে একটু নৌ ভ্রমণ করিয়ে একটা রেস্টোরেন্টে ডিনার করাতে নিয়ে গেলো। এই নৌভ্রমণের সময় আমাদের একটা হোটেল দেখানো হলো যেটা আরেকটা পুরানো প্যালেসকে কনভার্ট করে বানিয়েছে। খুব সম্ভব হোটেলটার নাম ‘চিডান’ এবং এর প্রতি রাতের ভাড়া ১২,০০০ ইউরো! শুনে আমি বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলাম। আমরা যেই রেস্টোরেন্টে খেতে গেলাম সেটা একটা আর্টিফিশিয়াল দ্বীপের উপরে বানানো আর নাম জি ফিশ রেস্টোরেন্ট। আমরা ডিনারে নানারকম এবং নানা প্রিপারেশনের মাছ খেলাম। একটা গিটান ডিশ আমার বেশ মজার লাগলো। অনেকটা আমাদের সামোসা ধরনের কিন্তু তেল ছাড়া আর ভেতরে মাছের কিমা আর চিজ। এখানে এরা বেশ চিজও খায়। আমি ডোলমাবাহচে প্যালেসে ঢুকতে না পেরে এটার বাইরেই প্যালেসের যে মসজিদটা আছে সেটা দেখতে গেলাম। এটা ১৮৫১ সালে তৈরি। এখানে মজার ব্যাপার হলো, এই পর্যন্ত কোনো মসজিদেই আমি দেখলাম না যে মেয়েদের ঢোকা বারণ বা ফটো তোলা মানা। শুধু প্রপার রেসপেক্ট দেখানোর রিকোয়েস্ট করা হয় এবং যে কোনো ধর্মের মানুষকেই ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। আমি তাই এখানেও আরামসে ঢুকে খটাখট ফটো তুলে ফেললাম। যাই হোক, এই ছয়দিন খুব দেখলাম ইস্তানবুল। তারপরও শুধু এই ইস্তানবুলেই দেখার অনেক বাকি রয়ে গেছে। এখানকার মানুষদের সাথে গল্প হলো, এদের মুখেই এই শহরের গল্পও শুনলাম, অফিসের বদৌলতে একদিন ১৫ মিনিটের জন্য বিখ্যাত বেলি ড্যান্সও দেখে ফেললাম। টপকাপির সামনে থেকে হায়া সোফিয়া আমার এই লেখায় আমি আমার এবং আমাদের তিন জনের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, ভালো লাগা, আনন্দ–এগুলোই বর্ণনা করার চেষ্টা করে গেছি মাত্র। আমার লেখার সাথে ছাপা ছবিগুলো আমার এবং দিদিভাইয়ের তোলা। আমার এই লেখা পড়ে অনেকেই আমার ‘হায়া সোফিয়া’ বলা নিয়ে মন্তব্য করেছেন –এটাকে “আয়া সোফিয়া” বা “হাজিয়া সোফিয়া” বলা হয় বলেছেন। আমি এখানে জানাতে চাই যে অনেকেই ইন্তানবুলে এটাকে হায়া সোফিয়া-ও বলে থাকেন আয়া সোফিয়া’র বদলে কিন্তু এটা কখনোই হাজিয়া সোফিয়া নয়। Related Collected Articles
Install ONLYOFFICE Document Server with Nginx on Debian 10 August 1, 2021 Step 1 – Install Packages Dependencies In this first step, we will install some packages dependencies needed by the Document Server, including the RabbitMQ-server, Redis, and Nginx-extras. Update your Debian system repository and install Document Server packages dependencies using the apt command below. sudo apt update sudo apt install redis-server… Read More
Installing Unijoy keyboard on ubuntu January 14, 2012January 14, 2012 You must need internet connection to do that. goto system>administration>synaptic packaga manager goto settings>repositories and select the cd rom. Related Read More