কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান , পারলে ঘুরে আসুন Rumi, December 23, 2010 সমুদ্র সৈকত : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২০ কি:মি: সৃষ্টিকর্তা যেন রূপসী বাংলার সব রূপ ঢেলে দিয়েছে বালুর আঁচলে। সুর্য্যস্নান কিংবা সমুদ্রস্নানে নিজেকে বিলীন করে দিন নীলাভ প্রকৃতিতে। খোলা জীপে, স্পীড বোটে বা ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানো আর সমুদ্রের বালির বিছানায় দাঁড়িয়ে শামুক-ঝিনুকের সাথে লোকোচুরি খেলতে খেলতে উপভোগ করুন সূর্যাস্তের অনাবিল আনন্দ। কক্সবাজারের নাজিরার টেক থেকে শুরু করে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত উক্ত বীচ। কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে উক্ত বীচ অবস্থিত। এর মধ্যে লাবনী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, ডায়বেটিক হাসপাতাল পয়েন্টসহ আরো কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখযোগ্য। হিমছড়ি: কক্সবাজার হতে প্রায় দশ কি:মি: দক্ষিণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেযর লীলাভূমি হিমছড়ী। হিমছড়ি যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা রয়েছে। কক্সবাজার শহর হতে মেরিন ড্রাইভ সড়কে সমুদ্র আর পাহাড়ের মধ্যদিয়ে প্রাণচঞ্চলতায় জীপে কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে অনায়াসে বেড়িয়ে আসুন ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হিমছড়ি। সেখানে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উদ্যোগে একটি পিকনিক স্পট তৈরী করা হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক সেখানে ভ্রমন করে সাগর ও পাহাড়ের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। রাডার ষ্টেশন: হিলটপ সার্কিট হাউসের দক্ষিণ পাশের চূঁড়ায় কক্সবাজার রাডার ষ্টেশনের অবস্থান। এখান থেকেই দেশব্যাপী ঝড়ঝাঞ্জা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়। রাডার যন্ত্রটি সুইডিশ শিশুকল্যাণ সংস্থা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় ১৯৬৮ সালে স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় তা অাধুনিকীকরণ করাহয়। বদর মোকাম: বদর মোকাম মসজিদটি শহরের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ। স্থানীয়ভাবে জনশ্রুতি আছে পীর বদরশাহ’র নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ তীরে কক্সবাজার সদর থানার পার্শ্বে মসজিদটি অবস্থিত। হিলটপ সার্কিট হাউস : জেলা পরিষদ ভবনের পশ্চিম দক্ষিণে পাহাড়ের চুঁড়ায় মনোরম পরিবেশে হিলটপ সার্কিট হাউসের অবস্থান। অল্পক্ষণের জন্য হলেও ভারতের দার্জিলিং এর মত মনে হবে। এর চূঁড়া থেকে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ ও পর্যটন নগরীর টপভিউ অবলোকন করা সম্ভব। লাইট হাউস: রাডার ষ্টেশনের দক্ষিণে অপর একটি পাহাড়ের চূঁড়ায় এর অবস্থান। লাইট হাউসের মাধ্যমেগভীর সমুদ্রে চলাচলরত জাহাজ ও অন্যান্য নৌযান দিক নির্দেশনা পায়। অর্থাৎ রাতের অন্ধকারে গভীর সমুদ্র থেকে যে দিকে লাইট দেখাযায় সে দিককে কক্সবাজার উপকূল হিসেবে ধরে যার যার অবস্থান ও গন্তব্য নির্ণয় করে নৌযান সমুহ চলাফেরা করে। প্রাচীন ঐতিহ্য: ১৬০০-১৭০০ খৃষ্টাব্দে শাহ সুজার আমলে একটি মসজিদ তৈরী হয়েছিল। এটি চৌধুরী পাড়া মসজিদ বা আজগবি মসজিদ নামে পরিচিত। এটি কক্সবাজার সদরের বি.ডি.আর ক্যাম্পের উত্তর দিকে অবস্থিত। হ্যাচারী জোন: আনবিক শক্তি কমিশন থেকে দক্ষিণে কলাতলী হ্যাচারী (চিংড়ী পোনা উৎপাদন ও বিক্রয় কেন্দ্র) জোনের অবস্থান। গভীর সমুদ্র থেকে মা চিংড়ি (মাদার চিংড়ি) সংগ্রহ করে নার্সিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে বাচ্চা (পোনা) উৎপাদন ও বাজারজাত করে। এখান থেকে বছরে হাজার কোটি টাকা আয় হয়। জোনে প্রবেশের সাথে সাথেমনে হবে সড়কের দু’পাশে ঝাউবন দাঁড়িয়ে যেন আপনাকে অভ্যর্থনা করছে। কক্সবাজার হ্যাচারী: প্রধান সড়ক হতে পশ্চিমে পুরানো সমুদ্র সৈকতের রাস্তার উত্তর দিকে গেলেই সরকারি চিংড়ি প্রজনন কেন্দ্রটি অবস্থিত। এখানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চিংড়ি পোনা উৎপাদিত হয়। প্যাগোড়া (জাদী): ১৭৯০ ইংরেজী সালের দিকে বার্মিজরা আরাকান বিজয়ের পর কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় রাখাইন সম্প্রদায় এটি নির্মাণ করে। তারা এটিকে স্মৃতিচিহ্ন বলে। কক্সবাজার সদর, রামু ও টেকনাফের পাহাড় বা উচুঁ টিলায় এ ধরনের প্যাগোড়া দেখা যায়। বিমান বন্দর: প্রধান সড়ক হতে উত্তরে মহিলা কলেজের (বিমান বন্দর সড়ক) পথ দিয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দর যাবেন। ছোট বিমান বন্দর হলেও এখানে বিমানের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিংড়িপোনা বহনকারী বিদেশী বিমান অবস্থান করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বিমান যোগে দেশী বিদেশী পর্যটকগন অনায়াসেই কক্সবাজার বেড়াতে আসতে পারেন। তাছাড়া সাদা সোনা নামক খ্যাত চিংড়ী পোনা কক্সবাজার থেকে কার্গো বিমান করে যশোর হতে খুলনা-সাতক্ষীরা নেওয়া হয়। অগ্গ মেধা বৌদ্ধ ক্যাং: কক্সবাজার সদরে ছোট বড় মিলিয়ে ৭টিরও বেশী বৌদ্ধ ক্যাং রয়েছে। আগ্গা মেধা ক্যাং ও মাহাসিংদোগীক্যাং সবচেয়ে বড়। এ সবে স্থাপিত বৌদ্ধ মুর্তিগুলো দেখবার মতো। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা ও বিষু উৎসব ক্যাং এ উদযাপন হয়। শুটকী রপ্তানী ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা: পুরো এলাকা জুড়ে বেশ কয়েকটি শুটকী রপ্তানী ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঘুরে দেখে আসুন কিভাবে শুটকী প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হচ্ছে। শুটকী মহাল (জিরো পয়েন্ট): এখানে বঙ্গোপসারে থেকে আহরিত মৎসকে প্রাকৃতিক উপায়ে শুকানো হয়। স্থানটি নাজিরার টেক নামে পরিচিত এবং এটি কক্সবাজারের জিরো পয়েন্ট। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র: বঙ্গোপসাগর থেকে আহরিত মৎস্য এখানেই নামানো হয়। এখান থেকেই দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বা প্রসেসিং সেন্টারে মাছ সরবরাহ হয়। এটি ফিসারীজ ঘাট নামেও পরিচিত। বাঁকখালী নদীর তীরে অবস্থিত উক্ত স্থানটি কক্সবাজারের মাছের প্রধান আড়ত। লবণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা: ইসলামপুর, নাপিতখালী এলাকা থেকে বাংলাদেশের চাহিদার ৮৫% লবণ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপনন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নামকরা লবণ বিক্রয় ও বিপনন প্রতিষ্ঠান গুলো এখান থেকেই লবণ সংগ্রহ করে। কক্সবাজার শহর থেকে ৩৫ কি:মি: দূরে এর অবস্থান। টেক্সী কিংবা মাইক্রোবাস যোগে বেড়ায়ে আসা যাবে। তা’ছাড়া চট্টগ্রামগামী বাসে চড়ে ইসলামপুর ষ্টেশনে নেমেও যাওয়া যাবে। বার্মিজ মার্কেট: রাখাইন রমনীদের পরিচালিত বিভিন্ন রকম হস্তশিল্প ও মনোহরী দ্রব্যাদির দোকান। এ সব দোকান /মার্কেটের অবস্থান বেশীর ভাগই পূর্ব বাজারঘাটার দিকে। ঝিনুক মার্কেট: ঝিনুক শিল্পের রকমারি জিনিসপত্রের প্রধান বিক্রয় ও বিপনন কেন্দ্র। এর অবস্থান প্রধান সড়কে হোটেল হলিডের মোডের পশ্চিমে। ঝিনুক শিল্পের যাবতীয় কারুকার্য খন্ডিত জিনিসপত্র এখানে পাওয়া যায়। সমুদ্র সৈকতেও শামুক ঝিনুকের আরো অনেক বিক্রয় ও বিপনন কেন্দ্র রয়েছে। শাহ ওমর শাহ (রা– এর দরগাহ: কাকারা ইউনিয়নে একটি নাম করা দরগাহ এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান রয়েছে। এখানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু লোকের সমাগম ঘটে। এ’ছাড়া কাকারায় প্রতি বছর একটি ঐতিহাসিক ঘোড় দৌঁড়ের মেলাও অনুষ্ঠিত হয়। কাকারার পাশে মানিকপুর ‘মহিষের দই’ এর জন্য বিখ্যাত। গোলাপ চাষ প্রকল্প: প্রায় ৫০ একর জায়গা জুড়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গোলাপ ফুলের চাষ করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয়হয়। গোলাপ বাগানে বেড়িয়ে আসুন ফুলের সৌরভে। উক্ত ফুলের বাগানটি চকরিয়াউপজেলার হারবাং এলাকায় অবস্থিত। এখান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ দেশের অন্যান্য স্থানে রপ্তানী হয়। দুলাহাজরা সাফারী পার্ক: সাফারী পার্ক হলো সরকার ঘোষিত এলাকা যেখানে বণ্যপ্রানীদেরকে তাদের প্রাকৃতিক …… প্রতিপালন করা হয়। এর মধ্যে দেশী-বিদেশী বন্য প্রাণীর বংশবৃদ্ধি ও অবাধ বিচরণের সুযোগ থাকে এবং যাতে পর্যটকগণ পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে ভ্রমণ রে টিকিটের বিনিময়ে শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ থাকে। সাফারী পার্ক চিড়িয়াখানা থেকে ভিন্নতর। চিড়িয়াখানায় জীব-জন্তু আবদ্ধ অবস্থায় থাকে আর সাফারী পার্কে মুক্ত অবস্থায় বিচরণ করে। এর আয়তন ৯০০ হেক্টর। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্ব পার্শ্বে ডুলাহাজারা রিজার্ভ ফেরেষ্টে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিতবনাঞ্চলে সাফারী পার্কটি অবস্থিত। কক্সবাজার জেলা সদর হতে উত্তরে পার্কটিরদূরত্ব ৫০ কি:মি: এবং চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণে ১০ কি:মি:। জেলা সদর হতে সাফারী পার্কে পর্যটকদের যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত যানবাহনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ভূতাত্ত্বিকভাবে এ অঞ্চল টারসিয়ারি পিরিয়ডের প্লিওসিন যুগের অন্তর্ভূক্ত যা ২৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে গঠিত হয়েছে। এটি ডুপিটিলা সিরিজের অন্তর্গত যা সেন্ডস্টোন, সিল্টস্টোন ও স্যালন দ্বারা গঠিত।প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত নির্জন উঁচুনিচু টিলা, প্রবাহমান ছড়া, হ্রদ, বিচিত্র গর্জন এর মত সু-উচ্চ ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক বৃক্ষ চিরসবুজ বনের জানা-অজানা গাছ-গাছালি, ফল-ভেষজ উদ্ভিদ, লতার অপূর্ব উদ্ভিদ রাজির সমাহার ও ঘন আচ্ছাদনে গড়ে উঠেছে সাফারী পার্ক। চারদিকে বেষ্টনী রয়েছে যাতে বন্যপ্রানী পার্কের বাইরে যেতে না পারে। পার্কের ভিতরে আভ্যন্তরীন বেষ্টনীও রয়েছে। আভ্যন্তরীন বেষ্টনীর ভিতরে বাঘ, সিংহ ও তৃণভোজী প্রাণী প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাস করে। সাফারী পার্ক সম্পর্কে অতি অল্প সময়ে এক পলকে এর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে ধারনার জন্য রয়েছে প্রধান ফটকের বাম পাশে ডিসপ্লে ম্যাপ। পর্যটকদের পার্কের ভিতরে অনায়াসে বাঘ-সিংহসহ অন্যান্য প্রাণী পর্যবেক্ষণ করার জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, প্রহরা পোষ্ট রয়েছে। প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র: সাফারী পার্কের অভ্যন্তরেই স্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশের প্রায় সবধরণের বনাঞ্চলের গাছপালা, বন্যপ্রাণীর মডেল, মুরাল ও ষ্টাফিং করে আলো ও শব্দ প্রবাহের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চল সম্পর্কে দর্শকদের সম্যক ধারণাদেয়া হয়। এখানে প্রায় ১০০ ধরণের বন্যপ্রাণী ও অসংখ্য গাছপালারমডেল মুরাল তৈরী করা হয়েছে। প্রায় ২৫ মিনিটের দীর্ঘ স্বব্যখ্যায়িত অডিও-ভিস্যুয়াল প্রোগ্রামের মাধ্যমে দর্শকগণ আনন্দ লাভ করবেন। প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে: বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, হাতি, নীলগাই, জেব্রা, জিরাফ, সাম্বার হরিণ, বাঁশভালুক, বন্যশুকর, চিত্রা ও মায়াহরিণ, প্যারাহরিণ, অজগর, বনমোরগ, গয়াল, বিভিন্ন প্রজাতির বিড়াল, বিভিন্ন প্রজাতির বানর, ভারতীয় বনরুই, সজারু, স্প্রংবক, কুদু, উল্লুক, খেঁকশিয়াল, উড়ন্ত কাঠবিড়ালী, বড়বেজী, সাপের বিভিন্ন প্রজাতি, মিঠা পানির কুমির, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বিভিন্ন প্রজাতির কাছিম, হাজারো রকমের বিরল গাছপালা আরো অনেক প্রাকৃতিক জীবজন্তু। কৃত্রিম হ্রদ: ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের অভ্যন্তরে বন্যপ্রাণীর পানীয় জলের জন্য ২টি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। কৃত্রিম হ্রদের পাশদিয়ে হাতির পিঠে চড়া আপনাকে অন্যরকম আনন্দে ভাসিয়ে তুলবে। আরো দেখেতে পাবেন। অসংখ্য অতিথি পাখি ও জলজ পাখি। প্রাকৃতিক লীলাভূমি বঙ্গোপসাগর বিধৌত পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক কার্পেট বিচানো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আসা পর্যটকগন সাফারীপার্ক পরিদর্শন করে নির্মল আনন্দ লাভ করা ছাড়াও প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে বেশকিছু সময় বন্য পরিবেশে থাকার সুযোগ পাবেন। মিউজিয়ামে রয়েছে: অজগর সাপের চামড়া, উড়ন্ত কাঠ বিড়ারীর চামড়া, হরিণের চামড়া, বন্যপ্রাণী আমাদের পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী বিনির্মান আমাদের প্রয়োজন। তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ডুলাহাজারা বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম’ স্থাপন করা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম। এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের পূর্ব পার্শে ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের প্রবেশ গেটের পাশে অবস্থিত। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম: বাংলাদেশের বনাঞ্চল বন্যপ্রাণীর সমারোহ সমৃদ্ধ। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্র হরিণ, মায়া হরিণ, হাতি, বানর, সজারু, হনুমান, ভাল্লুক, কুমির,ময়না, টিয়া, পেঁচা, মাছরাঙ্গা, সাপ, কচ্ছপ প্রভৃতি বিরল বন্যপ্রাণী বিচরণে বাংলার বনাঞ্চল ও প্রকৃতি মুখরিত। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাড়তি চাহিদা মিটাতে গিয়ে অনেক বনাঞ্চল রূপান্তরিত হয়েছে ঘরবাড়ী ও কৃষি জমিতে। কোথাও বনাঞ্চলে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, শিল্প-কারখানা, হাট-বাজার ও শহর-বন্দর। এমনি পরিস্থিতিতে আবাসস্থলে ধ্বংস হয়ে গ্রামীণ ও পাহাড়ী বন জংগল হতে অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রাকৃতিক বনাঞ্চলেও বন্যপ্রাণী আশংকাজনকভাবে কমে গেছে। ১৯৬০ সনে কক্সবাজারের বনাঞ্চল হতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মিঠাপানির কুমির সুন্দরবন হতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বন্যপ্রাণী আমাদের পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী বিনির্মান আমাদের প্রয়োজন। তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি,শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ডুলাহাজারা বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম’ স্থাপন করা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম। এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের পূর্ব পার্শে ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের গেটের পাশে অবস্থিত। পরিদর্শন ফি: ১। প্রাপ্ত বয়স্ক (১৫ বৎসরের উর্ধে): ১০/= ২। ছাত্র-ছাত্রী (১৫ বৎসরের নীচে): ৫/= ৩। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ: (৩০-১০০জন) ১০০/= ৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ: (১০০জনের উর্ধে) ২০০/= ৫। বিদেশী পর্যটক: ৪ ইউ এস ডলারের সমপরিমাণ বাংলাদেশী টাকা। ৬। মিনিবাসে পরিভ্রমণ: ২০/= ৭। প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন: ১০/= ৮। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম পরিদর্শন: ৫/= ৯। ব্যক্তিগত পরিবহনে পার্ক পরিদর্শন: ৫০/= ১০। গাড়ী পার্কিং ফি: ক) বাস প্রতিটি- ২৫/= খ) কার/ মাইক্রোবাস-১৫/= পরিদর্শনের সময় সূচী: প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। রামকোট তীর্থধাম: এটি রামকোট বনাশ্রমের পার্শ্বের পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। ৯০১ বাংলা সনে স্থাপিত। কথিত আছে রাম-সীতা বনবাস কালে এই রামকোটে অবস্থান করেছিল। তীর্থধামে মন্দিরের পাশাপাশি আলাদা একটি বৌদ্ধ বিহারে ধ্যানমগ্ন ছোট একটি বৌদ্ধমূর্তিও রয়েছে। জনশ্রুতি আছে, দু’টি ধর্ম পাশাপাশি শান্তিতেসহাবস্থানের প্রমাণ স্বরূপ সম্রাট অশোকের সময়ে এইমূর্তি স্থাপিত হয়। ছেংখাইব ক্যাং: রামুর শ্রীকুলস্থ বাঁকখালী নদীর তীরে ছেংখাইব ক্যাং (বৌদ্ধ বিহার টি) অবস্থিত। এ বৌদ্ধ বিহারে নানা রকম নক্সা খচিত আসন ও কাঁচের পাত্রে সংরক্ষিত ১০টিরও বেশী পিতল এবং আরো অনেক শ্বেত পাথরের মূর্তি শোভা পাচ্ছে। সব মিলে রামু থানায় ২৩টি বৌদ্ধ বিহারে শতাধিক মূল্যবান বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে। আধাঁর মানিক: রামু থানার কাউয়ার খোপ ইউনিয়নে উখিয়ার ঘোনায় একটি রহস্যময় গর্ত আছে। যার শেষ কোথায় কেউ জানে না। তাই একে কেন্দ্র করে জন্ম নিয়েছে অনেক কিংবদন্তী। স্থানীয় জনগণ একে ‘অাঁধার মানিক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার: ফতেখাঁর কুল ইউনিয়নে লামার পাড়া গ্রামে অপূর্ব সৌন্দর্য্য মন্ডিত বৌদ্ধ বিহারটি অবস্থিত। এ ক্যাং এ পিতল নির্মিত বৌদ্ধ মূর্তিটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি। এত কারুকার্য খচিত বৌদ্ধ বিহার কক্সবাজার জেলায় আর কোথাও নেই। রামকোট: রামু থানার রাজারকুল ইউনিয়নে পাহাড়ের চুঁড়ায় রামকোট বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত। মন্দিরটি ২০০০ বৎসর পূর্বে (খৃ:পূ: ৩০৮) নির্মিত হয়। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক অস্ত্র ত্যাগ করে হিন্দু ধর্মথেকে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়ে মুর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন। রামকোট বনাশ্রমেছোট বড় আরো অনেক বৌদ্ধমূর্তিরয়েছে। রামু চৌমুহনী থেকে রামকোট বনাশ্রমেরিক্সায় যাওয়া যায়। রাবার বাগান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মধ্যে রামু রাবার বাগান ভিন্ন আমেজের অপরূপ দর্শনীয় স্থান। ২৮,৮৮৬ একর জায়গার উপর বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন সংস্থার পরিকল্পনায় স্থাপিত কক্সবাজার জেলা তথা বাংলাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ রাবার বাগান। বেড়িয়ে আসুন প্রকৃতির সাথে মিতালি করে। নাইক্ষ্যংছড়ি লেক ও ঝুলন্ত ব্রীজ: এটি একটি প্রাকৃতিক জলাশয়। পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপূর্ব সমাহার। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মত দর্শনীয় স্থান। এখানে রয়েছে একটি ঝুলন্ত ব্রীজ। এর উপর দিয়ে লেকের এপাড় ওপড় যাওয়া যায়। কক্সবাজার শহর হতে সরাসরি গাড়ি যোগে নাইক্ষ্যংছড়ি যাওয়া যায় এবং দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায়। কক্সবাজার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দূরত্ব ২৮ কি:মি:। আইসোলেটেড নারিকেল বাগান: রামু চৌমুহনী হতে দক্ষিণে ৫ কি:মি: দুরে রাজারকুলের পাহাড়ে মনোরম পরিবেশে ২৫০ একর জায়গায় এটি অবস্থিত। বাগানটি ‘এ’ এবং ‘বি’ ব্লকে বিভক্ত। প্রত্যেকটি ব্লকে ৪টি করে সাব ব্লক রয়েছে। বাগানে নারিকেল গাছের সংখ্যা প্রায় ৯,১১২টি। ইনানী: পাথর আর নীল জলরাশির অাঁচল বিছানো ইনানীর সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের গর্জন, পাখীর কাকলী আর পাহাড়ী ঝর্ণার ধ্বনির অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে এখানে। সুপারী গাছেল ছায়াঘেরা ইনানীতে যেতে হলে কক্সবাজার থেকে উখিয়া কোটবাজার হয়ে জীপে পশ্চিমে প্রায় তিন মাইল গেলেই ইনানী সৈকত। এতে বন বিভাগের একটি সুন্দর ডাক বাংলো রয়েছে। কক্সবাজার থেকে এর দূরত্ব ৩৩ কি:মি:। এখানে ‘ইনানী বীচ রিসোর্ট’ নামে একটি অবসর যাপন কেন্দ্র রয়েছে। ইচ্ছে করলে সেখানে রাত্রি যাপন করতে পারেন। কানা রাজার সুড়ংগ: উখিয়া থানার জালিয়া পালং ইউনিয়নে পাটুয়ার টেক সৈকতের কাছে নিদানিয়া পাহাড়ের মধ্যে এ সুড়ংগ বা গর্ত। সুড়ংগের ব্যাস ১২ও ১২ একটা বড় ট্রাক অনায়াসে সুড়ংগ পথে প্রবেশকরতে পারবে। কথিত আছে, জনৈক মগ সম্প্রদায়ের কানা রাজার (এক চোখ অন্ধ) শাসন আমলে আত্মরক্ষার জন্যে এই সুড়ংগ নির্মান করেছিল। মাথিনের কূপ: উপন্যাসিক ধীরাজ ভট্টাচার্য উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে এস.আই. হিসাবে টেকনাফ থানায় বদলী হয়ে এসেছিলেন। তখন টেকনাফের নাম করা রাখাইন জমিদার ওয়াংথিনের একমাত্র আদুরে কন্য মাথিন থানার সামনের কুয়া থেকে নিয়মিত পানি নিতে আসতো। সকাল বিকাল পানি নিতে আসা ছিল মাথিনের সখ। পুলিশ কর্মকর্তা প্রতিদিন থানার বারান্দায় বসে বসে অপূর্ব সুন্দরী মাথিনের পানি নিতে আসা যাওয়া দেখতেন। আস্তেআস্তে ধীরাজ ভট্টাচার্যের সংগে মাথিনের চোখা চোখি এবং পরে তা’ প্রেমে পরিণত হয়। বিয়ে করতে ব্যর্থ হলে, মাথিন বিচ্ছেদের জ্বালায় তিলে তিলে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করে। মাথিনের অতৃপ্ত প্রেমের ইতিহাসের নীরব সাক্ষী মাথিনের কুপ। টেকনাফ থানা প্রাঙ্গনে একুপের অবস্থান। বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা ১৯৯৪ সালে বাঁশের তৈরী কূপটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে জেলা পরিষদ থেকে এদিকে সংস্কার করা হয়। এখন কূপটি দেখতে খুবই আকর্ষনীয়। সেখানে প্রেমের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও লেখা রয়েছে। ইদানীং উল্লিখিত কাহিনী অবলম্বনে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে। বৌদ্ধ ক্যাং: টেকনাফ উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ১০টি বৌদ্ধ ক্যাং রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তিটি ন্যা-থং পাহাড়ের ক্যাং-এ রয়েছে। বৌদ্ধ মূর্তিটির আকার আয়তন ও শৈল্পিক বৈশিষ্ট অন্যান্য গুলোর চেয়ে অনেক উন্নত। নাফ নদীর দৃশ্য: টেকনাফ শহরে প্রবেশের পূর্ব মুহুর্তে বি.ডি.আর চেকপোষ্টের পরে পাহাড়ের চূঁড়া থেকে নাফ নদীর দৃশ্য খুবই সুন্দর দেখায়। নাফ নদীর অপর পাড়ে বার্মা (মিয়ানমার) সীমান্ত খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যায়। স্থল বন্দর: এ বন্দর দিয়ে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন ও বিভিন্ন দেশ থেকে খাদ্য সামগ্রী ওসৌখিন সামগ্রী আমদানী ও রপ্তানী হয়। পর্যটকগন টেকনাফ কিংবা সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে এ বন্দর পরিদর্শন করতে পারেন। শাহপরীর দ্বীপ: সাবরাং ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম। পূর্বে এটি একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ছিল,কালক্রমে মূল ভূখন্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। উপজেলা সদর এর দূরত্ব প্রায় ১০ মাইল। এর নামকরন সম্পর্কে কেউ বলেন শাহ সুজারস্ত্রী পরীবানু ও শাহ সুজার ‘শাহ’ শব্দ যুক্ত হয়ে শাহপরী হয়েছে, কারো মতে ‘শাহ ফরিদ’ আউলিয়ার নামে দ্বীপের নাম করণ হয়েছে। অপরদিকে অষ্টাদশ শতাব্দীর কবি সা’বারিদ খাঁ’র ‘হানিফা ও কয়রাপরী’ কাব্য গ্রন্থের অন্যতম চরিত্র ‘শাহপরী’। রোখাম রাজ্যের রাণী কয়রাপরীর মেয়ে শাহপরীর নামেই দ্বীপের নামকরণ হয়েছে বলেও অনেকে বলেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপ: টেকনাফ থেকে প্রায় ৮ মাইল দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে প্রবাল দ্বীপটি অবস্থিত। জিঞ্জিরা, দক্ষিণ পাড়া, গলাছিরা ও চেরাদিয়া এই চারটি দ্বীপ নিয়ে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ’ গঠিত। এর প্রাচীন নাম নারিকেল জিনঞ্জিরা, পরবর্তীতে বৃটিশ আমলে এ দ্বীপকে সেন্টমার্টিন নাম করণ করা হয়। ভূ-তাত্ত্বিকগনের মতে দ্বীপটির বয়স ২০ লক্ষ বছর। এদ্বীপের মূল আকর্ষন সামুদ্রিক কাঁকড়া, কাছিম, প্রবাল, মুক্তা আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক এ্যাকুরিয়াম। অনেকের মতে এখানে জীবন্ত পাথরও রয়েছে। অপনার চিরকাঙ্খিত প্রবাল দ্বীপ এবং ছেঁড়াদিয়ার নির্জনতা আপনাকে বিমোহিত করবেই। আদিনাথ: ‘আদিনাথ মন্দিরটি’ উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় পীঠস্থান। মন্দিরটি সমুদ্রের পৃষ্ট হতে ২৮৮ ফুট উপরে পাহাড়ের চুঁড়ায় অবস্থিত। প্রতি বছর শিবচতুর্দ্দশী মেলায় দেশ-বিদেশী হাজার হাজার লোক এখানে সমবেত হয়। ‘মা’ অষ্টভূজা: মহেশখালী আদিনাথশিব মন্দিরের পার্শ্বে ‘অষ্টভূজা’ নামে অপর একটি বিগ্রের মূর্তি রয়েছে। কক্সবাজার কস্তুরাঘাট হতে নৌযানে ৪৫-৫৫ মিনিট আর স্পীডবোটে ১৫-১৮ মিনিট সময় লাগে। মহেশখালীর গোরকঘাটা জেটি হতে রিক্সা যোগে আদিনাথ মন্দির যাওয়া যায়। বৌদ্ধ ক্যাং: গোরকঘাটা জেটি হয়ে বাজারে প্রবেশ করার পথে রাস্তার বাম পার্শ্বেই মহেশখালী বড় ক্যাং টি চোখে পড়বে। ক্যাং-এ ধ্যানমগ্ন পিতলের বিরাট বৌদ্ধ মূর্তি নজরে পড়বেই। বড় ক্যাং- এর ভিতরে পৃথক কয়েকটি বৌদ্ধ বিহারেও অসংখ্য পিতলের বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে এর মধ্যে মাথায় হাত দিয়ে শায়িত এবং দাঁড়ানো বৌদ্ধ মূর্তি দু’টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ও দর্শনীয়। সোনাদিয়া দ্বীপ: মহেশখালীর দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত সোনাদিয়া একটি ছোট্ট বালির দ্বীপ। কক্সবাজার সদর হতে এর দূরত্ব ৪ মাইল। ঐতিহাসিকগণ এটিকে সোনালী দ্বীপ বলেছেন। প্রতি বছর শীতের মওসুমেএখানে হাজার হাজার অতিথি পাখির ভিড় জমে, তাই এটিকে অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্যও বলে। এ দ্বীপ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার টন শুটকি রপ্তানী হয়। প্রকৃতির সাজানো প্যারাবনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে বেড়িয়ে আসুন সমুদ্র বক্ষে পাড়িজমানোর নির্মল আনন্দে। এ দ্বীপে কস্তুরাঘাট বা মহেশখালীর গোরকঘাটা হতে কোন যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করে না। যেতে হলে ইঞ্জিন চালিত নৌযান বা স্পীডবোট ভাড়ায় নিয়ে যেতে হবে। নৌযানে ৪৫-৫০ মি: ও স্পীড বোটে ২০-৩০ মি: সময় লাগে। কুতুবদিয়া বাতিঘর: কুতুবদিয়া বাতিঘরের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্তু পুরাতন বাতিঘর এখন আর নেই। স্বাধীনতার পর পর সাগরের ক্রমাগত ভাঙ্গনের ফলে সে পুরাতন বাতিঘরটি সাগর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এখন একটি বাতিঘর কুতুবদিয়ায় নির্মান করা হয়েছে যা আগের বাতিঘরের মতো নয়। এটি দক্ষিণ ধুরুং-এ অবস্থিত। কুতুবদিয়াতে সাগর পাড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বায়কূল স্থাপন করা হয়েছে যা থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জনগনের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। মালেক শাহের দরবার শরীফ: শাহ্ আবদুল মালেক মহিউদ্দিন আল্-কুতুবী (রহ এক অধ্যাত্মিক সাধক। তাঁর দরবার শরীফ কুতুবদিয়া’র দক্ষিণ ধুরুং-এ অবস্থিত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন অসংখ্য নর-নারী তাঁর আস্তানায় আসেন। নৌ-পথে মালেক শাহ্ হুজুরের সমাধি বা মাজারে যেতে মালেক শাহের ঘাটে নেমে অনায়াসে দরবার শরীফে যেতে পারেন। অন্যদিকে কুতুবদিয়ার বড়ঘোপঘাটে নেমে রিক্সায় থানা সদরে এসে জীব বা রিক্সায় তাঁর সমাধি বা মাজারে যেতে পারেন। বড়ঘোপ থেকে দরবার শরীফের দূরত্ব আনুমানিক ৮ কি:মি:। Collected from: http://www.somewhereinblog.net/blog/mahfug110/29279930 Travel