মুজিবনগরের আম্রকাননে Rumi, November 30, 2010November 30, 2010 বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের শুরু আগামীকাল থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নানান স্মৃতি বিজড়িত মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর। বিজয়ের এই মাসে ঘুরে আসতে পারেন জায়গাটি থেকে। মুজিবনগর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে বাংলাদেশের অনর্্তবতর্ীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল। এর আগে ১০ এপ্রিল বাংলাদেশে বিপস্নবী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। ওইদিন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এবং মন্ত্রীসভা শপথ গ্রহণ করেন। এরপরে বৈদ্যনাথতলার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মুজিবনগর। মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপেস্নক্স স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানীর ঐতিহাসিক গুরুত্বকে স্মরণীয় করে রাখতে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপেস্নক্স। অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণের এই স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে একটি স্মৃতিসৌধ। স্মৃতি কমপেস্নক্সের ভেতরে মানচিত্রের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঐতিহাসিক ছয় দফার রূপক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে ছয় ধাপের গোলাপ বাগান। মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে ভাস্কর্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে এখানে। কমপেস্নক্সের বাইরে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ, পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণসহ বিভিন্ন ঘটনার ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ ১৯৭১-এর অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধের নানান ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ১৯৮৭ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে উদ্বোধন করা হয় এ স্মৃতিসৌধের। স্মৃতিসৌধটির নকশা করেন স্থপতি তানভীর করিম। সৌধটির স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্য হলো ১৬০ ফুট ব্যাসের গোলাকার স্তম্ভের উপর মূল বেদীকে কেন্দ্র করে ২০ ইঞ্চি পুরু ২৩টি দেয়াল রয়েছে। যা উদীয়মান সূর্যের প্রতিকৃতি ধারণ করে। সৌধের ২৩টি স্তম্ভ ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ২৩ বছরের সংগ্রমের প্রতীক। ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতিকে স্মরণ করে রাখতে বসানো হয়েছে ৩০ লাখ পাথর। মুজিবনগর আম্রকানন জেলার মুজিবনগরের বৈদ্যনাথতলায় প্রায় আট হেক্টরেরও বেশি জায়গাজুড়ে রয়েছে ঐতিহাসিক আমের বাগান। মুজিবনগর আম্রকানন নামেই জায়গাটি বেশি পরিচিত। ঐতিহাসিক এ বাগানেই হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের শপথ অনুষ্ঠান। জেলা সদর থেকে মুজিবনগরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার প্রায়। বাসে ভাড়া ১৫-২০ টাকা। প্রাচীন গ্রাম আমদহ জেলা শহর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে প্রাচীন গ্রাম আমদহ। প্রায় এক বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ প্রত্নস্থলের চারপাশে পরিখা ছিল বলে ধারণা করা হয়। এখান থেকে প্রাপ্ত একটি প্রাচীন স্তম্ভ জেলা প্রশাসক ভবনের সামনে রাখা আছে। আমঝুপি নীলকুঠি জেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে ১৮১৫ সাল কিংবা তারও কিছু পরে নির্মিত হয় নীলকুঠি। মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গার সড়ক ধরে যাওয়া যায় জায়গাটিতে। বিশাল প্রান্তরে পুরোনো গাছগাছলি ঘেরা নীলকুঠি বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত যায়গা। কিভাবে যাবেন ঢাকা থেকে সড়ক পথে মেহেরপুর যাওয়া যায়। ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে জে আর পরিবহন (০১৭১৭৬৫৭৭৯৯), মেহেরপুর ডিলাক্স (০১৭১১৩১৭৪৭৭), চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স (০১৭১১১৩৬৯৬৩), শ্যামলী পরিবহন (০১৯১৭৭৩১৬৭৫) প্রভৃতি পরিবহন সংস্থার নন এসি বাস মেহেরপুর যায়। ভাড়া ২৫০ টাকা। নিজস্ব পরিবহন নিয়ে মেহেরপুর গেলে যারা পাটুরিয়ার ফেরি পারাপারের ঝক্কি এড়াতে চান, তারা টাঙ্গাইলের পথে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা অতিক্রম করে লালনশাহ সেতু (পাকশী সেতু) পেরিয়ে কুষ্টিয়া হয়ে মেহেরপুর যেতে পারেন। কোথায় থাকবেন মেহেরপুরে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো আবাসন ব্যবস্থা হলো পর্যটন মোটেল মুজিবনগর (০২-৮৮৩৪৬০০, ০২-৮৮৩৩২২৯, এসি কক্ষ ১৪০০-২৩০০ টাকা, নন এসি কক্ষ ৭০০ টাকা)। এছাড়া মেহেরপুর বাস স্টেশনে ফিন টাওয়ার হোটেল (০৭৯১-৬২৭৬০, এসি দ্বৈত কক্ষ ৭০০ টাকা, নন এসি একক কক্ষ ১০০ টাকা, নন এসি দ্বৈত কক্ষ ২৫০ টাকা)। বড় বাজারে হোটেল মিতা (০১৮১২৪৮৫৪৪১, নন এসি একক কক্ষ ৫০ টাকা, নন এসি দ্বৈত কক্ষ ১০০ টাকা)। Travel