বিটিসিএল ও টেলিটকে আন্তর্জাতিক কল পরিচালনার ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে Rumi, February 25, 2012 রাষ্ট্রিয় মালিকাধীন টেলিকম প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড ও টেলিটক-এ আন্তর্জাতিক কল পরিচালনার ক্ষেত্রে অনিয়ম পেয়েছে সরকারী তদন্ত কমিটি। ধারণা করা হয়েছে এর ফলে বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব হারিয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যাদি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। তদন্তে প্রতিবেদনে কমিটি জানিয়েছে, তারা তদন্তে যথাযথ সহযোগিতা পেতে ব্যর্থ হয়েছে। অবৈধ ভয়েস ওভার ইন্টারনেট (ভিওআইপি)-এর সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারে তদন্ত পরিচালনার লক্ষ্যে ছয় সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটিটি আড়াই মাস আগে গঠন করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাইভেট ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে এবং ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জগুলো সাধারণত কল ডাটা রেকর্ড-এর জন্য অ্যানালাইজার (বিশ্লেষক) ব্যবহার করে থাকে। ফলে, কোন কোন নম্বর থেকে ফোন কল হচ্ছে এবং কলের স্থায়ীত্বকাল কতক্ষণ তার বিস্তারিত বিবরণ তাদের কাছে থাকে। কিন্তু বিটিসিএল-এর কাছে এ ধরণের কোন অ্যানালাইজার না থাকায় আন্তর্জাতিক কলগুলোর স্থায়ীত্বকাল সম্পর্কে কোন ধারণাই তাদের নেই। প্রতিবেদন অনুযায়ী এই অ্যানালাইজার না থাকার কারনেই রাজস্ব ফাঁকি দেয়া সহ অন্যান্য অনিয়মের ঘটনা ঘটছে সরকারী এই দুই প্রতিষ্ঠানে। তাদের মতে বিটিসিএল-এর সাথে ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জগুলোর সাথে কোন ধরণের বিলের ব্যবস্থা না থাকায় কলের স্থায়িত্ব এবং বিলের পরিমাপ করতে পারছে না। ফলে, বিদেশ থেকে আসা কলের জন্য আয়টি সরকার না পেলেও, তার জন্য খরচের বিলটি ঠিকই মেটাতে হচ্ছে সরকারী প্রতিষ্ঠানকে। উদাহরন সরূপ, একটি কল যদি বিদেশ থেকে এসে সেটা গ্রামীনফোন বা বাংলালিংক নেটওয়ার্কে যায়, তাহলে মোবাইল ফোন কোম্পানীটি বিটিসিএলকে একটি বিল পাঠায়। সরকার সেই কোটি কোটি কলের বিল পরিশোধ করে যাচ্ছে। কিন্তু সেই কলগুলোর কোনও আয় পাচ্ছে না। তাতে দু'দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকার। প্রতিবেদনে এও জানানো হয়েছে যে, বিটিসিএল-এর এক্সচেঞ্জগুলো টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির অ্যানালাইজারগুলোর সাথে সঠিকভাবে সংযুক্ত নয়। বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল কল টার্মিনেশনের জন্য বিটিসিএল তিনটি এক্সচেঞ্জ রয়েছে। এর মাঝে একটি এক্সচেঞ্জে সমস্যা থাকায় তা প্রায়ই রিবুট করে, ফলে ট্রাফিক ডাটা হারিয়ে ফেলে। বিটিসিএল-এর সাথে এই যন্ত্রাংশ বিক্রেতার সাথে কোন ধরণের বিক্রয়ত্তোর সেবার চুক্তি না থাকায় প্রতিনিয়ত প্রযুক্তিগত সমস্যায় সমুক্ষিন হয়ে থাকে যার সমাধান বেশির ভাগ সময়েই তাদের কাছে থাকে না বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক গেটওয়ের এবং বিটিসিএলের ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জগুলো একই প্ল্যাটফর্মের অধীনে এবং অন্যান্য টেলিকম অপারেটরের সাথে সংযোজিত হওয়ায় ইনকামিং কলগুলোকে সহজে সঠিক চ্যানেলে ব্যবহার না করে পাশ কাটানো হয়। রাষ্ট্রিয় মালিকাধিন একমাত্র মোবাইল কোম্পানি টেলিটক-এর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তার পাঁচটি নাম্বার থেকে অস্বাভাবিক দীর্ঘ ফোন কল করা হয়েছে যার স্থায়ীত্বকাল প্রায় ১৭ থেকে ২৩ ঘণ্টা পর্যন্ত। অন্য কিছু নাম্বার থেকে যে সকল আন্তর্জাতিক কল এসেছে সে ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। কমিটি বিদেশি রাষ্ট্র থেকে টেলিটকের একটি নির্দিষ্ট নাম্বারে দুটি কল করলে তার ফলাফলে অনিয়ম লক্ষ্য করেন। দেখা যায়, একটি কলের হিসাব অপারেটরের ডাটা রেকর্ডে সংরক্ষণই করা হয় নি। বিটিসিএল এবং টেলিটকের কাছ থেকে সঠিক সহযোগিতা পান নি বলে অভিযোগ করেছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত আরো গভীরভাবে পরিচালনার জন্য কমিটি বিটিসিএলের কাছ থেকে প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে এমন একজন দক্ষ ব্যাক্তিকে নিয়োগ করতে চেয়েছিল, কিন্তু সহযোগিতার অভাবে তারা এই নিয়োগে ব্যর্থ হয়। এমন কি, তদন্তের সময় এক্সচেঞ্জে থাকা কিছু তথ্য মুছে দিতে দেখেছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি ই-মেইল এবং চিঠির মাধ্যমে বিটিসিএল এবং টেলিটকের কাছে তথ্য জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠান দুটি বিশেষ করে আন্তর্জাতিক কল সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিমাণে তথ্য দেয় নি বলেও অভিযোগ করেছে তারা। কমিটি তার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সদস্য যুক্ত টাস্কফোর্স গঠনের সুপারিশ সহ মোট ১৩ টি সুপারিশ প্রদান করেছে। Src: http://tech.priyo.com/news/telecom/2012/02/25/2497.html Collected Articles বাংলা