‘অপন্যাসিক’ নন, প্রজ্ঞাবান দ্রষ্টা Rumi, July 20, 2012July 20, 2012 নন্দিত নরকে নয় নন্দিত স্বর্গে তাঁর স্থান হোক। এটাই এখন কাম্য। কেননা, তাঁর রঙিন করা কাহিনী নিয়ে আর নির্মিত হবে না নাটক-টেলিফিল্ম-সিনেমা। নন্দিত নরক থেকে আর আলোচনার রঙধনু উঠবে না। আর কোনদিনও তাকে কেউ ঘিরে ধরবেনা অটোগ্রাফ বা ফটোগ্রাফের জন্য। প্রায় চার দশক ধরে বাংলাদেশে কাটতির শীর্ষে থাকা ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ আর নেই। ক্যান্সার নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এম এ মোমেন বৃহস্পতিবার রাতে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা। কিংবদন্তীর এই জনপ্রিয় কথাশিল্পীর জন্ম ১৯৪৮ এর ১৩ই নভেম্বর নেত্রকোনায়। বেস্টসেলার উপন্যাসের অব্যর্থ কারিগর হুমায়ূনের দ্বিতীয় সাফল্যের ক্ষেত্র ছোটগল্প, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে বিস্তৃত। একনিষ্ঠ ও বিশাল পাঠকশ্রেণী তৈরির মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদ ভূমিকা রেখেছেন বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের প্রবৃদ্ধিতে। রসায়নশাস্ত্রের একসময়কার অধ্যাপক নিজস্ব কথনরীতি এবং নাগরিক মধ্যবিত্ত জীবনের নিবিড় বর্ণনার জন্য সমালোচকদের চোখেও বিশিষ্ট। সুনিপূণ শিল্পী দক্ষ রূপকার প্রজ্ঞাবান দ্রষ্টা তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’র ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন সাহিত্য ও ইতিহাসবিদ আহমেদ শরীফ। তিনি লেখেন, “বাঙলা সাহিত্যক্ষেত্রে এক সুনিপূণ শিল্পীর, এক দক্ষ রূপকারের, এক প্রজ্ঞাবান দ্রষ্টার জন্মলগ্ন যেন অনুভব করলাম।” মাত্র চারটি উপন্যাস লিখেই ১৯৮১ সালে পান বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার। কোনো কোনো সমালোচক তার উপন্যাসকে ‘উপন্যাসোপম বড় গল্প’ [বিশ্বজিৎ ঘোষ], এমনকি ‘অপন্যাস’ [হুমায়ূন আজাদ] বলে অভিহিত করলেও, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাহিত্যের কোনো আলোচনাই তাকে বাদ রেখে সম্ভব হয়নি। সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশের দীর্ঘ সামরিক শাসনের সময় হুমায়ূন ‘সামাজিক দ্বন্দ্বে’ অংশ নেননি বলে এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন লেখক আহমদ ছফা। কিন্তু এই সময়ের মধ্যবিত্তের জীবনের নিস্পন্দ রোমান্টিকতাকে নিখুঁতভাবে তুলে এনেছেন তাঁর প্রধানত সংলাপনির্ভর উপন্যাসমালায়। মুক্তি দিয়েছেন চতুর্থ শ্রেণীর লেখকদের থেকে কবি শামসুর রাহমান লিখেছেন, “অনেক উৎকৃষ্ট রচনাই অত্যন্ত জনপ্রিয়। হুমায়ূন আহমেদ আমাদের সস্তা চতুর্থ শ্রেণীর লেখকদের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছেন।” হুমায়ূন আহমেদের দুই শতাধিক উপন্যাসের ভেতর ‘শ্রেষ্ঠ’গুলোকে আলাদা করা কঠিন। ছন্নছাড়া অথচ নিজস্ব দর্শনসমৃদ্ধ হিমু এবং আধিভৌতিক রহস্যের উন্মোচক মিসির আলী নামের দুই চরিত্র নিয়ে তার বেশকটি আলোচিত উপন্যাস রয়েছে। সবার উপরে ১৯৮৪ সালে বিটিভিতে ‘এইসব দিনরাত্রি’র মধ্য দিয়ে ধারাবাহিকের নাট্যকার হিসেবে আবির্ভূত হন হুমায়ূন আহমেদ। একটি সাক্ষাৎকারে লেখক হিসেবে নিজের জনপ্রিয়তার জন্য টিভি নাটকের অবদানের কথা বলেছেন হুমায়ূন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত তার লেখা জনপ্রিয় ধারাবাহিকের ভেতর রয়েছে ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’ ইত্যাদি। ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের ঘটনাপ্রবাহ দর্শকদের এতটাই আলোড়িত করেছিলো যে তারা নায়ক ‘বাকের ভাই’ এর ট্র্যাজিক পরিণতি মানতে না পেরে রাজধানীসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ পর্যন্ত করে। বেসরকারি টেলিভিশনের যুগ শুরু হলে হুমায়ূন আহমেদ নিজেই নাটক পরিচালনা শুরু করেন। এ পর্যায়ে অবশ্য আগের একক জনপ্রিয়তার আসন থেকে তাকে নেমে আসতে হয়। কিন্তু তারপরও তাঁর স্থান ছিল সবার উপরে। নাটকে কৃত্তিমতা দূর করেছিলেন তিনিই বাংলাদেশের নাটকে কৃত্তিমতা দূর করেছিলেন; যোগ করেছিলেন বাস্তবতার সংলাপ। আর তাই বাংলা নাটক-সিনেমার পুরোটা জুড়েই উড়ে বেড়াবেন তিনি। তাঁর এই উড়ে বেড়ানো চলবে শত বছর-সহস্র বছর; ঠিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-কবি নজরুল আর জীবনানন্দের পথ ধরে। চার দশকের কথাশিল্পী উপন্যাসিক হিসেবে তাঁর এই পরিচিতির সূত্র ধরেই গত শতকের নব্বইয়ের দশকে হুমায়ূন আহমদের নামটির সঙ্গে যুক্ত হয় চলচ্চিত্র পরিচালকের পরিচয়। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া অনুদানের ছবি ‘আগুনের পরশমণি’ আটটি শাখায় জিতে নেয় জাতীয় পুরস্কার। একই বছর একুশে পদক পান তিনি। পরবর্তী বছরগুলোয় তার নিজের প্রতিষ্ঠান নুহাশ চলচ্চিত্র ও ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় আরো কয়েকটি ছবি বানান। সবশেষ কাজ করেছেন ‘ঘেঁটুপুত্র কমলা’ নামের একটি ছবি নিয়ে। উপন্যাস, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রের পাশাপাশি শিশু সাহিত্য এবং সায়েন্স ফিকশন রচয়িতা হিসেবেও হুমায়ূন আহমেদের নাম গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। স¤প্রতি শিশুদের একটি গানের রিয়ালিটি শোতে বিচারক হিসেবেও দেখা গেছে তাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ছাত্র হুমায়ূন আহমেদ দুই পক্ষে ছয় সন্তানের জনক। হুমায়ূনের বাবা পুলিশ কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে হুমায়ূন জ্যেষ্ঠ। এক ভাই জাফর ইকবাল একজন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, ছোটভাই আহসান হাবীব কার্টুনিস্ট। ঢাকার অদূরে গাজীপুরে ‘নুহাশ পল্লী’ নামে হুমায়ূনের শ্যুটিং উপযোগী খামার বাড়িতে নানা সময় আপ্যায়িত হয়েছেন সাহিত্যিকসহ দেশ-বিদেশের নামকরা অনেক ব্যক্তি। তাঁর কাছে ছিল আশার আলো এই পরিচয়ের পাশাপাশি সত্যিকারের মানুষ হিসেবেও একটা পরিচয় ছিল তাঁর। তিনি ছিলেন অত্যন্ত শিশুসুলভ আচরনের মানুষ। ২০০৩ থেকেই তাঁর বাসায় আসা-যাওয়া ছিল সাংবাদিকতার সূত্র ধরে। বিভিন্ন সময় সাংবাদিকতার এই অঙ্গন নিয়ে আলাপ হয়েছে, আলাপ হয়েছে আমাদের শিক্ষা-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক বর্তমান আর রাজনৈতিক উত্তরণ নিয়ে। সবসময় তাঁর কাছে ছিল আশার আলো। কখনোই হতাশা তাকে গ্রাস করতে পারেনি। বরং তার কাছেই হতাশা পরাজিত হয়ে পালিয়েছে। এমন একজন অনবদ্য আশাবাদী মানুষের চলে যাওয়া, জীবনাবসান হওয়া অথবা বিদায় নেয়া; কোনোটাই মেনে নিতে পারছিলাম না। তবুও মানতেই হবে। ডারউইনের কথা মানলেও মানতে হবে যে, মানুষ মরণশীল। সেই মরণ নতুন করে দুঃখ দিলো আমাদের কল্পনার হিমুকে কেড়ে নিয়ে। আর কোনো মেলায় হলুদ পাঞ্জাবী পড়া সারি সারি হিমুর ভীড়ে তাকে দেখা যাবে না; দেখা যাবে না নুহাশ পল্লীর বিস্তির্ণ নীলের নিচে সবুজ ঘাসের গালিচায় এলোমেলো পায়ে হাঁটতে। তাতে কি, আমরা তাকে খুঁজে বেড়াবো তার অমর উপন্যাসের পৃষ্টায় পৃষ্ঠায়, নাটকের উইটসমৃদ্ধ সংলাপের ছত্রে ছত্রে, তার প্রতিটি সৃষ্টিতে। Src: http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=d1297f544e8d04ac453a69eaa07efb0f&nttl=20120720070747127613 Related Uncategorized Thoughts বাংলা
How smart is Your Right Foot? November 6, 2008 Just try this. It is from an orthopaedic surgeon………… This will boggle your mind and you will keep trying over and over again to see if you can outsmart your foot, but, you can’t. It’s pre-programmed in your brain! Related Read More
আবুল খায়ের দুর্যোগে দুঃসাহসী April 7, 2012 ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক নুরুল হক বললেন, ‘আবুল খায়ের, তুমি কি যেতে পারবে?’ আবুল খায়ের বললেন, ‘পারব স্যার। কিন্তু ফিরে আসতে পারব, সে আশা নাই। আমি মারা গেলে স্যার লাশটা বাড়িতে পাঠায় দিয়েন!’ ঘটনাস্থল আরিচাঘাটের কাছাকাছি। সময়টা ২০০৫ সালের মে মাস। দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে গেছে লঞ্চ এম ভি… Read More
Miracle of Humankind- of the grace of Allah! Survivors after 17 days of building collapse May 10, 2013May 10, 2013 DHAKA, Bangladesh (AP) — A seamstress buried in the wreckage of a collapsed garment factory building for 17 days was rescued Friday, a miraculous moment set against a scene of unimaginable horror, where the death toll shot past 1,000. Reshma survived, in remarkably good shape, by eating dried food that… Read More