একশোবছর আগের ভবিষ্যদ্বাণী Rumi, January 25, 2012 নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে কিছু জ্যোতিষী আগামী বছর কী হতে পারে তার ভবিষ্যদ্বাণী দেয়। গণমাধ্যমগুলো অতীত অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে সামনের বছর কী ঘটতে পারে তার একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আজ থেকে ১০০ বছর পর বিশ্বে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে তার ভবিষ্যদ্বাণী করা সত্যিই কঠিন। ১৯০০ সালের ডিসেম্বর মাস। আমেরিকার এক অখ্যাত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার জন এলফ্রেথ ওয়াটকিনস দেশটির লেডিস হোম জার্নালে আগামী একশ’ বছরে কী হতে পারে শিরোনামে একটি লেখা লিখেন। যেখানে তিনি ১৪টি ভবিষ্যদ্বাণী করেন। যার মধ্যে ১০টি বাস্তবে পরিণত হয়েছে। ২০০০ সালের বিশ্ব কেমন হবে তার ধারণা দিতে গিয়ে ওয়াটকিনস লেখেন, আমার ভবিষ্যদ্বাণীগুলো অনেকের কাছে অদ্ভুত ও অসম্ভব মনে হতে পারে। কিন্তু আমি দেশের প্রধান প্রধান বিজ্ঞানী ও গবেষণা সংস্থার গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওয়াটকিনস ছিলেন লেডিস হোম জার্নালের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্যাটারডে ইভিনিং পোস্টের নিয়মিত লেখক। এ দুই ম্যাগাজিনের ইতিহাস সম্পাদক জেফ নিলসন সপ্তাহ দুয়েক আগে ওয়াটকিনসের ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে বর্তমান যুগের পাঠককে জানান এবং নিখুঁত ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য তার প্রশংসা করেন। অবশ্য অনেকে খুব অবাক হয়েছেন এটা ভেবে যে, কিভাবে ওয়াটকিনস এত নিখুঁত ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারল। এবার দেখা যাক, তার আশ্চর্যজনক ১০ ভবিষ্যদ্বাণী যা ২০০০ সালের মধ্যে সত্যে পরিণত হয়েছে। ১। ডিজিটাল কালার ফটোগ্রাফি অবশ্য ওয়াটকিনস বলেননি কীভাবে ডিজিটাল ক্যামেরা বা কম্পিউটার কাজ করবে। কিন্তু ফটোগ্রাফির নতুন প্রযুক্তি জনগণ কীভাবে ব্যবহার করবে তার সম্পর্কে বলেন। তিনি বলেন, ‘ছবি বিশ্বের যে কোন দূরত্বে পাঠানো যাবে। যদি সুদূর চীনে কোন ঘটনা ঘটে তাহলে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মার্কিন সংবাদপত্রে তা ছাপানো যাবে। ছবিতে প্রকৃতির সব রং দিয়ে ছাপানো যাবে, ছবি হবে রঙিন ও জীবন্ত।’ নিলসনের মতে, এটা ছিল অত্যন্ত দূরদর্শী ভবিষ্যদ্বাণী। কেননা সেসময় চীনে কোন ঘটনা ঘটলে মার্কিন পত্রিকায় তা ছাপতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ লাগত। আর রঙিন ছবি তখনো গবেষণার বিষয়। ছবিই ছিল তখন আশ্চর্যের বিষয় আর রঙিন ছবি ছিল আরো আশ্চর্যের। নতুন ক্যামেরা দিয়ে রঙিন ছবি ধারণ এবং তা দ্রুত বিশ্বের যে কোন জায়গায় পাঠানোর ভবিষ্যদ্বাণী করা ছিল সত্যি দুরূহ। কেননা তখন বর্তমান আধুনিক যুগের কোন উন্নত প্রযুক্তি ছিল না যার ওপর ভিত্তি করে ওয়াটকিনস একথা বলবেন। ২। আমেরিকানদের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি ওয়াটকিনস বলেন, আমেরিকানরা গড়ে এক থেকে দুই ইঞ্চি লম্বা হবে। নিলসনের মতে, ওয়াটকিনসের ভবিষ্যদ্বাণী যথার্থ প্রমাণিত হয়েছে। ১৯০০ সালে মার্কিন পুরুষদের গড় উচ্চতা ছিল ৬৬ থেকে ৬৭ ইঞ্চি এবং ২০০০ সালে এসে তা দাঁড়ায় ৬৯ ইঞ্চি। বর্তমানে মার্কিন পুরুষের গড় উচ্চতা ৬৯ দশমিক ৫ ইঞ্চি এবং মার্কিন নারীদের গড় উচ্চতা ৬৪ ইঞ্চি। ৩। মোবাইল ফোন ওয়াটকিনস বলেন, তারবিহীন টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে বসে এক স্বামী শিকাগোর বাড়ির শয়নকক্ষে অবস্থানরত স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথন করতে পারবে। নিউইয়র্ক থেকে ব্রুকলিনে ফোন করার মত সহজে চীনেও ফোন করতে পারবে। ওয়াটকিনসের সময়ে আন্তর্জাতিক কোন কলের কোন ধারণাই ছিল না। কেননা এর মাত্র ১৫ বছর আগে আলেকজান্ডার বেল যুক্তরাষ্ট্রের এক উপকূল থেকে অন্য উপকূলে টেলিফোন করেন সফলভাবে আর ওয়াটকিনসের তার ছাড়া ফোন করার ভবিষ্যদ্বাণী ছিল একেবারেই বৈপ্লবিক। ৪। তৈরি করা খাবার ওয়াটকিনস বলেন, বর্তমানের বেকারী পণ্যের মত দোকান থেকে রান্না করা ও প্যাকেট করা খাবার পাওয়া যাবে। এটাও সত্যি হয়েছে। বড় বড় রাস্তার পাশে বা সুপার মার্কেটগুলোতে এখন সব খাবারই পাওয়া যায়, রান্না করা আর প্যাকেট করা। যদিও বাংলাদেশের মত দরিদ্র দেশে সব খাবার রান্না করা পাওয়া যায় না তবে উন্নত দেশগুলোতে এটা এখন সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে, ওয়াটকিনস হোটেলের খাবারের কথা বলেননি। সেসময়ও খাবার হোটেল ছিল। তিনি বলেছেন, রেডি মিল বা প্রস্তুত করা খাবার যা নিয়ে যাওয়া যায়, সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রয়োজন মুহূর্তে খাওয়া যায়। ৫। জনসংখ্যার বৃদ্ধির নিম্নহার ২০০০ সালে এসে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা হবে ৩৫ কোটি থেকে ৫০ কোটি। নিলসন বলেন, ১৮০০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল তা অব্যাহত থাকলে ২০০০ সালেই জনসংখ্যা একশ’ কোটি ছাড়িয়ে যেত। সেখানে ওয়াটকিনস বলেছেন, তা হবে ৩৫ থেকে ৫০ কোটি। এই দূরদর্শী চিন্তা সত্যিই অসাধারণ। ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ কোটিতে পৌঁছে। ওয়াটকিনসের সংখ্যার সঙ্গে হুবহু না মিললে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আশ্চর্যজনকভাবে কমে যাওয়াটা মিলে গেছে। ১৯০০ সালে এ ধরনের ভাবা ছিল সত্যিই বিস্ময়কর। ৬। গরম ঘরের শাক-সবজি: ‘কৃষকদের জন্য শীত পরিণত হয়ে গ্রীষ্মে, রাত পরিণত হবে দিনে। কাঁচের ঘরে বিশাল বিশাল বাগান থাকবে এবং মাটির নিচে থাকবে বৈদ্যুতিক তার।’ ওয়াটকিনস এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, দ্রুত বৃদ্ধির জন্য রাতে শক্তিশালী বৈদ্যুতিক আলো ফেলা হবে শাক-সবজির ওপর। এ আলো সূর্যের আলোর মত উদ্ভিদের সালোক সংশ্লেষণে সহায়তা করবে। মাটির নিচে বিদ্যুত্ প্রবাহিত করে মূল্যবান উদ্ভিদগুলোকে দ্রুত বড় হতে সহায়তা করা হবে এবং ক্ষতিকর, অপ্রয়োজনীয় উদ্ভিদ তথা আগাছাগুলো মেরে ফেলা হবে। রঙিন আলোক রশ্মি বিভিন্ন উদ্ভিদের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। অসময়ে দ্রুত চারা গজানো ও বেড়ে উঠতে বিদ্যুেক কাজে লাগানো হবে। লন্ডনের গার্ডেন মিউজিয়ামের ফিলিপ নরম্যান বলেন, কাঁচের ঘরে বিশাল বাগান এখন বাস্তবের মুখ দেখেছে। বিদ্যুতের ব্যবহার সম্পর্কেও তিনি সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করেন। তবে রঙিন আলো ও মাটির নিচে বিদ্যুত্ প্রবাহ এখনো বাস্তবে পরিণত হয়নি। তা হয়ত এখনো পরীক্ষাধীন রয়েছে। তবে এটা ঠিক উদ্ভিদের বংশ বিস্তার ও অঙ্কুরোদগমে সহায়তা করছে বিদ্যুত্। বিশেষ করে শীত প্রধান দেশে গ্রিন হাউসের অভ্যন্তরণে গাছপালার বংশ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে বিদ্যুত্। ৭। টেলিভিশন: ‘মানুষ ও অন্যান্য বস্তুকে হাজার মাইল দূরে দেখানো যাবে। ক্যামেরা ও বিদ্যুতের সাহায্যে যে কোন ঘটনা বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে দেখা যাবে।’ ওয়াটকিনসের এ ভবিষ্যদ্বাণী স্যাটেলাইট টেলিভিশনের কারণে সত্যে পরিণত হয়েছে। পরবর্তীতে ওয়েব ক্যামেরা এসে বিষয়টি আরো সহজ করে দিয়েছে। এ ভবিষ্যদ্বাণী একেবারে নির্ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ৮। ট্যাঙ্ক: ট্যাঙ্ক সম্পর্কে প্রথম বলেছিলেন লিওনার্দোদা ভিঞ্চি। তবে ওয়াটকিনস জোর দেন অন্যখানে। তার ভাষায়, ‘প্রচন্ড শক্তিশালী চাকা আবিষ্কৃত হবে। যার সাহায্যে যুদ্ধযান দ্রুতগতিতে চড়াই-উতরাই পার হতে পারবে।’ নিলসনের মতে বর্তমান যুগের দ্রুতগতির ট্যাঙ্কের কথা এখানে বলা হয়েছে। ৯। বড় ফল: ‘স্ট্রবেরির আকার হবে এক একটা আপেলের মত। আমাদের নাতির নাতিরা বড় বড় ফল খাবে।’ গত শতকে বহু ফলকে জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে ফলের স্বাদ, আকার ও ফলন পরিবর্তন করা হয়েছে। যেগুলোকে জেনেটিক্যালি মডিফাইড বা জিএমফুড বলা হয়। তবে ওয়াটকিনস স্ট্রবেরি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে বেশি আগ্রহী ছিলেন। ১০। দ্রুতগতির ট্রেন: ‘ট্রেন সাধারণত প্রতি মিনিটে দুই মাইল পথ অতিক্রম করবে। আর এক্সপ্রেস ট্রেন যাবে ঘন্টায় ১৫০ মাইল।’ এই ভবিষ্যদ্বাণীর একশ’ বছর পর আক্ষরিক অর্থে দ্রুতগতির ট্রেন ‘আকিলা এক্সপ্রেস’ চালু হয়েছে বোস্টন ও ওয়াশিংটন ডিসির মধ্যে যার গতি ঘন্টায় ১৫০ মাইল বা ২৪০ কিলোমিটার। আর গত বছর চীন উদ্বোধন করেছে ঘন্টায় ৫০০ কিলোমিটার ছুটতে সক্ষম এমন ট্রেন। একশ’ বছর আগে করা এই ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে পরিণত হয়েছে। তবে ওয়াটকিনসের করা ৪টি ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়নি। এবার সেগুলো দেখা যাক। ১। সি, এক্স, কিউ থাকবে না: ‘ওয়াটকিনস বলেন, ‘প্রতিদিনের ব্যবহারযোগ্য ইংরেজি বর্ণমালায় সি, এক্স ও কিউ থাকবে না। অপ্রয়োজনীয়তার কারণে এসব বর্ণ পরিত্যক্ত হবে।’ ওয়ার্ল্ড ফিউচার সোসাইটির প্যাট্রিক টাকার বলেন, এটা একেবারেই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এটা ঘটার সম্ভাবনাও কম। তবে প্যাট্রিক বলেন, এখানে একটা বিষয় বিশেষ মনোযোগ দাবী করে। তাহল আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে যোগাযোগের ধরন পরিবর্তন হওয়ার ইঙ্গিত। ২। প্রত্যেক দিনে ১০ মাইল হাঁটবে: ওয়াটকিনসের মতে, “মানুষের কর্ম ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। ফলে প্রয়োজনেই মানুষ প্রত্যেক দিন ১০ মাইল হাঁটবে।” টাকারের মতে এটা বড় ধরনের ভুল ভবিষ্যদ্বাণী। বাস, ট্রেন, বিমান, কারের এ যুগে মানুষ ১০ মাইল হাঁটে না। তবে হ্যাঁ ভ্রমণ বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। ওয়াটকিনস যদি বলত ভ্রমণ বাড়বে তাহলে শতভাগ সত্যি হত। ৩। বড় শহরে কার (গাড়ি) থাকবে না: “শহরে স্থান স্বল্পতার কারণে দ্রুতগামী সকল যানবাহন মাটির তলায় বা মাটির উপর দিয়ে চলাচল করবে।” যদিও অনেক শহরে ঐতিহাসিক স্থানসমূহে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ। ওয়াটকিনসের এ ভবিষ্যদ্বাণী সত্য না হলেও পাতাল রেল আর এলিভেটেড এক্সপ্রেসের (সড়কের উপর সড়ক) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। ৪। মশা বা মাছি থাকবে না: ওয়াটকিনস বলেন, “মশা, মাছি ও তেলাপোকা থাকবে না। মানুষ তাদেরকে নির্মূল করবে।” এটাও ওয়াটকিনসের ভুল ভবিষ্যদ্বাণী। মশা মাছি তো যায়নি উপরন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে বিলুপ্ত হওয়া ছারপোকা আবার বিপুল বিক্রমে ফিরে এসেছে। ওয়াটকিনসের ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছে। এটাই সবচেয়ে অবাক বিষয়। তিনি যখন এগুলো লিখছিলেন তখন বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি সহজলভ্য ছিল না। ফলে পূর্ণ কল্পনাশক্তি ও বিশ্লেষণী প্রয়োগ করতে হয়েছে। যে চারটি ভুল হয়েছে এমনও হতে পারে ২১০০ সালে তা সত্য হয়ে যাবে। -বিবিসি অবলম্বনে Related Uncategorized Thoughts বাংলা
Whois Server October 23, 2008 I was looking for a decent whois server which unfortunately couldn’t find any fruitful one. It seems, this is not a readymade tool to distribute- whoever has one, he creates that of his own! Added to my frustration- .BD has no whois server and surprisingly, noticed- few other cTLD has… Read More
Grameen vs Bangladesh March 31, 2011March 31, 2011 The feud in Bangladesh between prime minister Sheikh Hasina and Mohammed Yunus, the founder of the microloan-making Grameen Bank and a winner of the Nobel Peace Prize, is being portrayed as a modern-day replay of the famous battle between the wicked Kauravas and the virtuous Pandavas in the Indian epic,… Read More
7 Inspiring Steve Jobs Quotes That Just Might Change Your Life March 23, 2015 He came, he saw, he conquered…and he left behind some words to live by: “I’m convinced that about half of what separates successful entrepreneurs from the non-successful ones is pure perseverance.” Everyone says they go the extra mile. Almost no one actually does. Most people who do go there think,… Read More